বাংলা নিউজ > ক্রিকেট > দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফের ৬ বছরের জন্য নির্বাসিত ক্যারিবিয়ানদের দু'বার T20 বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক
পরবর্তী খবর
দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ফের ৬ বছরের জন্য নির্বাসিত ক্যারিবিয়ানদের দু'বার T20 বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক
2 মিনিটে পড়ুন Updated: 23 Nov 2023, 04:22 PM ISTTania Roy
দুর্নীতি বিরোধী চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। এই নিষেধাজ্ঞা গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২০২৯ সালের নভেম্বরে। নিজেদের ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা।
মারলন স্যামুয়েলস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মারলন স্যামুয়েলসকে ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করল আইসিসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে স্যামুয়েলসের বহু দুরন্ত সব পারফরম্যান্স রয়েছে। অবসরের পর ঘরোয়া লিগে খেলছিলেন তিনি। কিন্তু দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায়, তাঁকে নিষিদ্ধ করা হল। আগামী ছয় বছর কোনও ফরম্যাটে খেলতে পারবেন না স্যামুয়েলস।
ক্যারিবায়নদের হয়ে দু'টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন স্যামুয়েলস। ২০১২ এবং ২০১৬ দু'বারই ফাইনালে নজর কাড়া পারফম্যান্স ছিল তাঁর। তিনি যথাক্রমে ৭৮ এবং অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। একমাত্র ক্রিকেটার হিসাবে সব সংস্করণ মিলিয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে দু'বার ম্যাচের সেরার ক্রিকেটার হওয়ার নজিরও রয়েছে তাঁর। সেইতারকার গায়েই লাগল কলঙ্কের দাগ।
দুর্নীতিবিরোধী চারটি ধারা ভঙ্গের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন স্যামুয়েলস। এই নিষেধাজ্ঞা গত ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। শেষ হবে ২০২৯ সালের নভেম্বরে। নিজেদের ওয়েবসাইটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা।
এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার আইসিসি-র এইচআর অ্যান্ড ইন্টিগ্রিটি ইউনিটের প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল বলেছেন, ‘স্যামুয়লস প্রায় দুই দশক ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। এই সময়ে তিনি দুর্নীতিবিরোধী অনেক কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন এবং ভালো করেই জানতেন, এই নীতির অধীনে কী কী বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
৪২ বছর বয়সী স্যামুয়েলসের কঠিন শাস্তি থেকে ভবিষ্যতে অনেকে শিক্ষা নেবেন বলেও আশা প্রকাশ করেছেন মার্শাল। তাঁর দাবি, ‘যদিও তিনি এখন অবসর নিয়েছেন, কিন্তু যখন অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, তখন তিনি সেটার অংশ ছিলেন। যারা নিয়ম ভঙ্গ করতে চান, তাদের জন্য স্যামুয়েলসের ৬ বছরের নিষেধাজ্ঞা শক্তিশালী প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।’
স্যামুয়েলসকে এমিরেটস ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন কোড সংক্রান্ত নিয়ম ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টেন লিগের ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। গত অগস্টে দুর্নীতিবিরোধী স্বতন্ত্র একটি ট্রাইব্যুনালে শুনানির পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। এদিন শাস্তির ঘোষণা করা হল।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতির ২.৪.২, ২.৪.৩, ২.৪.৬ ও ২.৪.৭ নম্বর ধারা ভেঙেছেন স্যামুয়েলস। ২০১৯ সালে আবুধাবি টি-টেন লিগে তিনি কর্ণাটক টাস্কার্স দলে ছিলেন, যদিও কোনও ম্যাচ খেলেননি।
ট্রাইব্যুনালের সদস্যদের অধিকাংশের সিদ্ধান্তে ২.৪.২ ধারা ভঙ্গের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে স্যামুয়েলসকে। এ ধারায় বলা রয়েছে, কোনও রকমের উপহার, অর্থ, আতিথেয়তা বা অন্য সুবিধা নেওয়ার তথ্য স্বীকৃত দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তাকে না জানানোটা অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হবে।
বাকি তিনটি ধারায় অবশ্য স্যামুয়েলসকে ট্রাইব্যুনালের সব সদস্যই দোষী মনে করেছেন। এর মধ্যে আছে ৭৫০ বা এর বেশি মার্কিন ডলার পাওয়ার তথ্য গোপন করা, তদন্তে স্বীকৃত কর্মকর্তাকে সহযোগিতায় ব্যর্থতা ও তথ্য গোপন করে স্বীকৃত কর্মকর্তার তদন্ত কার্যক্রম বিলম্বিত করা।
দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া স্যামুয়েলসের জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। ২০০৮ সালে এমন অপরাধে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ভারতের ওয়ানডে ম্যাচের তথ্য পাচার করতে গিয়ে ভারতীয় পুলিশের ফাঁদে ধরা পড়েন। সেই সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড (সিডব্লুআই) তাঁর পাশে ছিল। তদন্ত চলাকালে স্যামুয়েলস বিশ্বকাপও খেলেছিলেন। তবে পরে অপরাধ প্রমাণিত হয়। তবে নির্বাসন কাটিয়ে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দু'টি বিশ্বকাপ জেতাতে বড় ভূমিকা রাখেন বিতর্কিত এই ব্যাটসম্যান।