একমাত্র নিরাপত্তাজনীত কারণে পাকিস্তানে ক্রিকেট খেলতে যেতে রাজি হয় না বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি। ভারতীয় দল পাকিস্তানের ভূ-খণ্ড থেকে দূরে থাকে মূল সেই কারণেই। তবে তার পরেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড আইসিসিকে আশ্বস্ত করতে সমর্থ হয় যে, পাকিস্তানের মাটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো টুর্নামেন্টের জন্য নিরাপদ।
চলতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাঝেই পাকিস্তানে জঙ্গি গতিবিধি চোখে পড়েছে। যদিও তার সরাসরি প্রভাব পড়েনি চলতি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। তবে সোমবার রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে যে ঘটনা ঘটল, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটমহলে আতঙ্ক ছড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট।
বিশ্বের যে কোনও প্রান্তেই ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রায়শই নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে মাঠে ঢুকে নিজেদের হিরোকে প্রণাম করতে বা তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার আবদার করতে দেখা যায়। ভারতেও হামেশাই ঘটে তেমন ঘটনা। তবে কোনও ইসলামিক দলের সমর্থক, যাদের ভাবমূর্তি মোটেও ইতিবাচক নয়, মাঠে ঢুকে বিদেশি ক্রিকেটারের কার্যত ঘাড় ধরে ফেলছে, এমন ঘটনা মেরুদণ্ড ঠান্ডা করে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দেখা যায় ঠিক তেমন ঘটনাই।
সোমবার রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচে সম্মুখসমরে নামে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। এই ম্যাচের ফলাফলের উপর নির্ভর করছিল টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের টিকে থাকা। রাচিন রবীন্দ্রর দাপুটে ব্যাটিংয়ে যখন একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ছিটকে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত দেখাচ্ছেে, ঠিক তখনই নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে মাঠে ঢুকে পড়তে দেখা যায় একজন দর্শককে।
সংবাদ সংস্থা এপি-র রিপোর্ট অনুযায়ী মাঠে ঢুকে পড়া সেই দর্শক পাকিস্তানের ইসলামিক রাজনৈতিক দল টিএলপি-র সমর্থক। সেই দর্শকের হাতে ছিল টিএলপি লিডার সাদ রিজভির ছবি। ম্যাচের মাঝেই মাঠে ঢুকে পড়া দেই দর্শককে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরতে দেখা যায় নিউজিল্যান্ডের তারকা ব্যাটার রাচিন রবীন্দ্রকে। ঘটনায় যারপরনাই অতঙ্কে দেখায় কিউয়ি তারকাকে।
রাচিনের সঙ্গে সেই সময় ব্যাট হাতে ক্রিজে উপস্থিত ছিলেন টম লাথাম। তাঁর চোখেমুখেও ছিল আতঙ্কের ছাপ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মাঝে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই। তাই রাওয়ালপিন্ডির এই ঘটনা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক সন্দেহ নেই।
এক্ষেত্রে মাঠে ঢুকে পড়া সেই দর্শক যে নিছক ক্রিকেটপ্রেমী নয়, সেটা বোঝা যায় স্পষ্ট। তার উদ্দেশ্যও ছিল অন্য। নিরাপত্তারক্ষীরা দেই দর্শককে ধরে মাঠের বাইরে বার করে দিলেও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাদের ঘুম উড়তে পারে এই ঘটনার পরে।