শুভব্রত মুখার্জি:- চলতি ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অনবদ্য এক কৃতিত্ব গড়েছেন ভারতীয় অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। রাজকোট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে তাঁর টেস্ট কেরিয়ারের ৫০০তম উইকেটটি নিয়েছেন অশ্বিন। এর পরেই তাঁকে প্রশ্ন করি হয়েছিল তাঁর অ্যাচিভমেন্ট নিয়ে। বোলার অশ্বিনের মূল্যায়ন করতে গিয়ে অশ্বিনের সোজাসুজি জবাব, ‘আমি অ্যাক্সিডেন্টাল স্পিনার (ভাগ্যচক্রে স্পিনার হয়েছি)।’ তার পরেও এই অ্যাচিভমেন্ট একেবারেই খারাপ নয় বলে মত তাঁর। পাশাপাশি চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের ব্যাজবল ক্রিকেট এবং তাঁর বোলিংয়ের জন্য এটা কতটা চ্যালেজ্ঞ সেইসব নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।
ব্যাজবলের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি জানি না ভালো বা খারাপের মানদন্ডটা কি। আমি এটা বলব একজন কতটা ভালো বোলিং করছে, তার হাত থেকে বলটা কত ভালোভাবে বেরোচ্ছে, একজন ব্যাটার কতটা ঝুঁকি নিচ্ছে এইসব বিষয়ের উপর ভালো বা খারাপ বিষয়টি নির্ভর করে। যদি দেখি একজন ব্যাটার বসে পড়ে আমাকে স্লিপের মাথার উপর দিয়ে মারছে তবে আমি বিষয়টির প্রশংসা করব। আমার বিরুদ্ধে ও এইভাবেই রান করতে চায়। আর সেটা যদি ও করতে পারে তাহলে তো ওঁকে কৃতিত্ব দিতেই হয়।’
অশ্বিন আরও বলেন, 'আমরা প্রায় সাড়ে চার সেশন ব্যাট করেছি (৪৪৫ রান করতে)। ওরা সেইটা দুই সেশনেই করে ফেলতে চাইছে। তাহলে সেটাই হোক। তবে আমি এটা নিয়ে বেশি ভাবছি না যে ওরা আমাকে মাঠের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে মারতে সক্ষম হচ্ছে। আমার কাছে পরিষ্কার কোন বল করে আমি উইকেটটা নেব। ঝুঁকিটা কিন্তু ওদের নিতে হবে। আমি এখনও আমার সেরা বল করতে পারছি। অন্য প্রান্ত থেকে যে স্পেলটা করেছি সেটা যথেষ্ট ভালো করেছি বলেই আমি মনে করি।'
তিনি আরও যোগ করেন, 'আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমি ঠিক কোন জায়গায় রয়েছি তা প্রতি মাসেই কিন্তু পরিবর্তন হয়। ফলে এইসব নিয়ে আলাদা করে ভাবি না। দেখুন, জীবনে আমি এখন যে জায়গাতে রয়েছি তাতে আমি খুব খুশি। দেখুন লোকে আমাকে নিয়ে কি ভাবছে তাতে আমি বিশেষ আমল দিই না। শেষ ৫-৬ বছরে তো একেবারেই নয়। আমি সবাইকে ঠিক বা ভুল প্রমাণ করার দায়িত্ব নিয়ে রাখিনি তাই না? একটা সময় ছিল যখন আমার জীবনে অন্ধকার সময়ের মধ্যে দিয়ে আমি গিয়েছি। সেই সময়ে টিভিতেও খেলা দেখতাম না। আমি গত রাতে টিভিতে আফগানিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দেখেছি। নিউজিল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচও দেখেছি। আমি আমার জীবনে সবসময়ে একজন ব্যাটার হতে চেয়েছি। তবে জীবন আমার কাছে অন্যরকম স্পেশালভাবে ধরা দিয়েছে। জীবন আমাকে অনেক নতুন সুযোগ দিয়েছে। আমি যখন আইপিএলে সিএসকের হয়ে খেলার সুযোগ পাই তখন মুরলিধরন নতুন বলে বল করতে ইচ্ছুক ছিল না। ফলে নতুন বলে বল করার দায়িত্ব আমার উপরে পড়ে। আইপিএল খেলে আমি অনেকের চোখে পড়ি। শেষ পর্যন্ত টেস্টে আমার অভিষেক হয়। ফলে একজন অ্যাক্সিডেন্টাল স্পিনারের জন্য এটা (টেস্টে ৫০০ উইকেট) কম বড় নজির নয়। ফলে আমি খুব খুশি এটা বলতে পারি।'