কিন্তু বাংলার মানুষজন কিছুদিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নয়াদিল্লিতে আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট ফরমান দিয়েছেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে রক্ষণাত্মক হলে চলবে না। দলকে পাল্টা আক্রমণে নামতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, রাজনৈতিক উদ্দেশে বাংলার টাকা আটকে রাখা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
একদিকে কলকাতার রাজপথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভা, অপরদিকে কালো পোশাক পরে বিধানসভায় হাজির হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক থেকে মন্ত্রীরা। এই পর্যন্ত সব নির্দেশ মতোই চলছিল। এমন আবহে কালো শাড়ি পরে বিধানসভায় হাজির হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা দেখে সবাই চমকে উঠলেন। বাংলার মানুষের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে আজ, বুধবার বিধানসভায় সব তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক–মন্ত্রীরা কালো পোশাক পরে এলেন। কেউ কালো কুর্তা পরে এসেছেন, কারও গায়ে কালো টি–শার্ট, কেউ কালো রঙের শাড়ি পরে এসেছেন। আর তারপরই ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় এলেন সরু কালো পাড়ের শাড়ি পরে।
এই কালো পাড়ের শাড়ি পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি আজ স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল, মানুষের পক্ষে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিপক্ষে আন্দোলনের মুখ তিনিই। পাল্টা আন্দোলন তিনিই গড়ে তুললেন। আজ দুপুরে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউজের সামনে অমিত শাহের সভা। তার আগে কালো পোশাক পরে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে তীব্র করে তুলতে চাইছে বিজেপি। তারই পাল্টা মোকাবিলায় বঞ্চনার রাজনীতি তুলে ধরতে বিধানসভায় নিশ্চিত হয়ে গেল, আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
এদিন বিধানসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী সব বিধায়ক–মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। তিনিও কালো পাঞ্জাবি পরে হাজির হয়েছেন। বিধানসভায় ঢুকে প্রথমেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তারপর একে একে সকলের সঙ্গে মিলিত হন। এখানে সকালেই হাজির হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর সভার জন্য বেরিয়ে যান। অমিত শাহকে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–নেত্রীরা খোলা চিঠি লিখে বাংলার প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছেন। সেই বকেয়া পাওনা নিয়ে সরাসরি কোনও জবাব দিতে চাইছে না বিজেপি। তবে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের দুর্নীতির জেরেই সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই কেন্দ্রের টাকা আসছে না।
কিন্তু এই কথা শুনতে নারাজ বাংলার মানুষজন। তাই তাঁরা কিছুদিন আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নয়াদিল্লিতে আন্দোলন করতে গিয়েছিলেন। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট ফরমান দিয়েছেন, এখন যা পরিস্থিতি তাতে রক্ষণাত্মক হলে চলবে না। দলকে পাল্টা আক্রমণে নামতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে, রাজনৈতিক উদ্দেশে বাংলার টাকা আটকে রাখা হয়েছে। অমিত শাহের সভার আগে কলকাতা জুড়ে আরও একরকম পোস্টার ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ওই পোস্টারে লেখা, মোটা ভাই ভোট নাই।