এসএসসি মামলায় চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য। শনিবার নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব মনোজ পন্তের সঙ্গে চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যেই ফোন আসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেইসময় তিনি জানান, ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে শিক্ষাকর্মীরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের মাসিক ভাতা দেওয়া হবে। গ্রুপ ‘সি’ কর্মীরা পাবেন মাসিক ২৫,০০০ টাকা। আর গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীদের মাসিক ২০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, শিক্ষকদের মতোই যাতে আপাতত শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে যেতে পারেন, সেজন্য সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন করা হবে।
কতদিন সেই ভাতা দেওয়া হবে?
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে আগামী মাসেই সুপ্রিম কোর্টে সেই রিভিউ পিটিশন দায়ের করা হবে, যাতে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের মতোই শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে যাওয়ার অনুমতি পান। আর যতদিন না সেই মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে, ততদিন রাজ্য সরকারের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে শিক্ষাকর্মীদের মাসিক ভাতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের নয়া ‘যোগ্য’-তালিকা থেকে বাদ আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময়! এবার কী করবেন তিনি?
এমনিতে ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। চাকরিচ্যুত হয়েছেন প্রায় ২৬,০০০ জন। পরবর্তীতে পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে প্রশ্নাতীতভাবে অযোগ্য চিহ্নিত না হওয়া শিক্ষকদের আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। গ্রুপ ‘সি’ এবং গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীরা সেরকম কোনও অনুমোদন পাননি। সেই আবহে মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষাকর্মীদের ভাতা দেওয়ার ঘোষণা করলেন।
আরও পড়ুন: ববিতার নামও যোগ্য় শিক্ষকদের তালিকায়! খবর শুনেই ঘুম ভাঙল এসএসসির, এল বড় নির্দেশ
দুর্নীতিবাজ নেতাদের বাঁচাতে ভাতা দেওয়া হচ্ছে, দাবি বিজেপির
আর শিক্ষাকর্মীদের সেই মাসিক ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বৈধতাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ করছে রাজ্য সরকার। কিছু মুষ্টিমেয় দুর্নীতিবাজ নেতাকে বাঁচাতে এবং দুর্নীতি থেকে নজর ঘোরানোর জন্য এই টাকা দেওয়া হচ্ছে। যা ভারতীয় আইন ব্যবস্থার বিরোধী।
আরও পড়ুন: তাঁরা কেন ‘অযোগ্য’? জবাব চেয়ে ব্রাত্যর বাড়ির সামনে ধরনা, ক্ষণিকেই উঠে গেল অবস্থান!
মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ বিজেপির
রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ আরও দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যে ঘোষণা করেছেন, তাতে এসএসসি নিয়োগ মামলায় চাকরিচ্যুত শিক্ষাকর্মীদের সাময়িকভাবে কিছুটা অর্থনৈতিক সুরাহা হবে বটে। তাঁরা সংসার চালানোর মতো কিছুটা অর্থ পাবেন। কিন্তু শুধুমাত্র দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য রাজ্য সরকার সেই টাকা দিচ্ছে। এই টাকাটা আদতে রাজ্যের করদাতাদের টাকা। যা তাঁরা সৎপথে উপার্জন করেছেন বলে দাবি করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ।