রাত পোহালেই বুধবার দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন হবে। ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার মহাযজ্ঞ হয় সেখানে। পূর্ণাহুতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং আরতি করেছেন। নানা পেশার শীর্ষস্তরের কর্তাব্যক্তিরা আমন্ত্রণ পেয়েছেন। বিরোধী রাজনীতির নেতা–নেত্রীরা আমন্ত্রিত হয়েছেন এবং সৌজন্যের নজির দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী আছেন। যিনি আমন্ত্রণ পেয়েছেন। আর তাই দিঘা যাওয়ার আগে দলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও প্রণাম জানালেন। ফেসবুক পোস্টে লিখলেন নানা কথা।
ঠিক কী লিখেছেন বলাগড়ের বিধায়ক? নিজের কিছু মনের কথা লিখেছেন। আর কিছু অতীতের প্রসঙ্গে তুলে এনেছেন এই তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। মনোরঞ্জন ব্যাপারী আজ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমি একজন দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি দলিত সাহিত্য আকাদেমির সভাপতি হিসাবে। এমনিতে আমার কাছে মন্দির, মসজিদ, গির্জা সব সমান। পুরীতে আমি বেড়াতে গিয়েছিলাম। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরে যাইনি। সমুদ্র দেখে, সমুদ্র স্নান করে ফিরে এসেছি। কিন্তু কাল দিঘায় মন্দির দেখতেই যাচ্ছি। সমুদ্র স্নান তারপর হবে।’ এটাই তাঁর মনের কথা।
আর কী লিখেছেন বলাগড়ের বিধায়ক? এবার তিনি ইতিহাসের পাতা খুলে মনে করিয়ে দিয়েছেন কিছু কথা। যা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। মনোরঞ্জন ব্যাপারী লেখেন, ‘প্রায় সাড়ে ৫০০ বছর আগে চৈতন্যদেব নিম্নবর্ণের মানুষকে নিয়ে বৈষ্ণবধর্ম আন্দোলন করেছিলেন। সেই আক্রোশে তাকে পুরীর পাণ্ডারা হত্যা করেছিল। পরবর্তী সময়ে গান্ধীজি ও পুরীর মন্দিরে দলিতদের প্রবেশ অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। দলিতদের প্রবেশ অধিকার দিতে পারেননি। একজন দলিত মানুষকে এমন সুযোগ আর সম্মান দেবার জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও প্রণাম।’
আরও পড়ুন: ‘আলোচনা সদর্থক, অবস্থান চলবে’, এসএসসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর বার্তা চাকরিহারাদের
দিঘায় জগন্নাথ দেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠায় চলছে নানা আচার–অনুষ্ঠান। সোমবার থেকে শুরু হয় শাস্ত্রীয় মতে পুজোপাঠ ও হোমযজ্ঞ। আজ মঙ্গলবার বিশ্বশান্তির জন্য হয় মহাযজ্ঞ। ১০০ কুইন্টাল আম এবং বেলকাঠের সঙ্গে ২ কুইন্টাল ঘি পোড়ানো হয়। এদিন এই মহাযজ্ঞে পূ্র্ণাহুতি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজের হাতে আরতিও করেন। বুধবার ৩০ এপ্রিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতেই জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদঘাটন এবং জগন্নাথদেবের প্রাণপ্রতিষ্ঠা হবে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিয়ম মেনে সেটা করবেন পুরীর রাজেশ দ্বৈতাপতি।