একুশের কলকাতা পুরসভা ভোটের ভরাডুবিতে খুশি নন বিজেপির নেতৃত্ব। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেই বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। এরই মধ্যে নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণা করেছে বিজেপি। সেখানে নাম নেই বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং সম্পাদক সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরীর। তারপরেই চড়মে উঠেছে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল। নতুন রাজ্য কমিটি ঘোষণার পরেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে এসেছেন সায়ন্তন বসু। অন্যদিকে, এই বিজেপি নেতার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেছেন কয়েকজন তৃণমূল নেতা। এই দুটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সায়ন্তন বসুর দল ছাড়া নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।এদিকে, রাজ্য কমিটির নতুন তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই সায়ন্তন বসু টুইটারে লেখেন, 'আমি দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ৬ বছর ধরে আমাকে দল যে দায়িত্ব দিয়েছিল তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আশা করি আগামী দিনে নতুন টিম দলকে অন্য জায়গায় পৌঁছে দেবে।'বুধবার রাতেই সায়ন্তন বসুর বিধাননগরের বাড়িতে তৃণমূলের বর্তমান এবং একজন প্রাক্তন বিধায়ককে দেখা গিয়েছে। তারপরেই সায়ন্তন বসুর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে।তবে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে আসা এবং তার বাড়িতে তৃণমূল নেতাদের দেখতে পাওয়া এই দুটি বিষয়কে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে রাজি নন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'রাজনৈতিক নেতারা একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। সেখানে অন্যায় তো কিছু নেই। আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একে অপরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। সায়ন্তনও দেখা করতে পারে। এখানে অসুবিধার কিছুই দেখছি না।' তবে রাজনৈতিক মহল এই বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।এদিকে, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে আসা প্রসঙ্গে সায়ন্তন বসু বলেন, 'নতুন রাজ্য কমিটি হয়েছে। কমিটিতে না থাকলে তো হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে থাকার কোনো যুক্তি নেই। তাই বেরিয়ে এসেছি।'তবে বিজেপি সূত্রের খবর, কমিটি থেকে বাদ পড়ার পরেই অসন্তুষ্ট হয়েছেন সায়ন্তন বসু। তাকে ঘিরে দলবদলের জল্পনা শুরু হলেও অবশ্য সে কথা উড়িয়ে দিয়েছেন সায়ন্তন বসু। তার ঘনিষ্ঠ মহলের কাছে শোনা যাচ্ছে, তিনি বিজেপির জন্য আপাতত কাজ করবেন না। তার পরিবর্তে তিনি আরএসএসের হয়ে কাজ করবেন। এর আগেও তিনি আরএসএসের হয়ে কাজ করেছেন।লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনের পরেই নিজেকে কিছুটা আড়ালে রাখতে চেয়েছিলেন সায়ন্তন বসু। সপ্তাহ খানেক আগেই সিঙ্গুরে বিজেপির কর্মসূচি সায়ন্তন বসু নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে তাকে দেখা যায়নি। তারপরেই রাজ্য কমিটি থেকে বাদ যাওয়া, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে আসা এবং তার বাড়িতে তৃণমূল নেতাদের দেখা করা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।