কারও হাতে রয়েছে ঝাঁটা, আবার কেউ ঝাঁটার বিকল্প হিসাবে জোগাড় করেছেন নারকেল গাছের শুকনো পাতা! তা দিয়েই বিকাশ ভবনের সামনের রাস্তা পরিষ্কার করছেন তাঁরা। যাঁদের কথা বলা হচ্ছে, তাঁরা পুরনিগমের কর্মী নন। তাঁরা শিক্ষক! কিন্তু, পরিস্থিতির চাপে আজ তাঁরা 'যোগ্য' হয়েও চাকরিহারা। হকের চাকরি সসম্মানে ফেরতের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন তাঁরা। সেই আন্দোলনের আজ (রবিবার - ১৮ মে, ২০২৫) ১২ দিন। এদিনই বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থানরত চাকরিহারা শিক্ষকদের একাংশকে দেখা গেল রাস্তা ঝাঁট দিতে!
চাকরি ফেরতের দাবিতে গত ৭ মে (২০২৫) থেকে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিহারা 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারা। ইতিমধ্যেই সেই আন্দোলনে বহু মানুষের রক্ত ঝরেছে। তারপরও আন্দোলনের পথে থেকে সরে আসেননি সমাজ গড়ার কারিগররা। বর্তমানে বিকাশ ভবনের সামনের রাস্তাই তাঁদের 'ঘর-বাড়ি'! তাই, সকলেই যেমন নিজের বাসস্থান পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখেন, আন্দোলনে রাস্তায় নামা শিক্ষকরাও একইভাবে বিকাশ ভবনের সামনের রাস্তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন।
এদিন আবার অনেককে মোবাইলে ভিডিয়ো কল করতেও দেখা গেল। আসলে, রবিবার ছুটির দিন। এদিন পরিবারের বাকি সব সদস্য একসঙ্গে বাড়িতেই রয়েছেন। কিন্তু, চাকরিহারারা পড়ে রয়েছেন রাস্তায়। তাই, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাস্তার সেই আন্দোলনস্থল থেকেই বাড়িতে ভিডিয়ো কল করে পরিবারের বাকিদের সঙ্গে কিছুটা ভার্চুয়াল সময় কাটালেন কেউ কেউ!
শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে - আগামী ৩১ ডিসেম্বর (২০২৫) পর্যন্ত দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নন বা দাগী নন, এমন শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে গিয়ে পড়াতে পারবেন। কিন্তু, তারপর কী হবে, কারও জানা নেই। কারণ, সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ নিয়ে চাকরিহারাদের পুনরায় নিয়োগের কথা বলেছে। 'যোগ্য'রা এই ব্যবস্থাপনায় রাজি নন।
তাঁরা আন্দোলন যেমন করছেন, তেমনই গরমের ছুটি পড়ার আগে পর্যন্ত ক্লাসে পড়িয়েওছেন। রবিবার তাঁদের অনেককে দেখা গেল, আন্দোলনস্থলে বসেই স্কুলের পড়ুয়াদের খাতা দেখতে!