প্রতিবেশী দুই রাজ্য। বাংলা ও ওড়িশা। বিপদে পড়লে বার বার বাংলা সহায়তার হাত বাড়িয়েছে ওড়িশার দিকে। এই বাংলা থেকেই লক্ষ লক্ষ ভক্ত যান ওড়িশায়। কিন্তু দিঘার জগন্নাথধাম তৈরির পরেই সেই সম্পর্কে ক্রমশ যেন চিড় ধরছে। ওড়িশা সরকার সম্প্রতি দিঘার জগন্নাথধামের মূর্তিতে যে নিমকাঠ ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এনিয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছে। ওড়িশার সন্দেহ পুরীর মন্দিরের নবকলেবরের পরে বাড়তি পবিত্র নিমকাঠ কোনওভাবে দিঘার মূর্তি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে। এরপরই তদন্তের নির্দেশ।
এবার এনিয়ে মুখ খুলেছেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জি কালিঘাটের স্কাইওয়াক করলে কোয়েশ্চেন হয় না। মমতা ব্যানার্জি দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক করলে কোয়েশ্চেন হয় না। মমতা ব্যানার্জি দুর্গাপুজো করলে তখন কোয়েশ্চেন হয় না।। মমতা ব্যানার্জি কালীপুজো করলে কোয়েশ্চেন হয় না। জগন্নাথধাম টা খুব গায়ে লেগেছে না! বলা হচ্ছে আমি নাকি নিমগাছও চুরি করেছি। আরে আমার বাড়িতেই তো চারটে নিমগাছ আছে। কটা দরকার জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের চুরি করতে হয় না। চুরি বিদ্যা ভয়ঙ্করী যদি সে পড়ে ধরা। যারা চোর…চোরের মায়ের বড় গলা। তুমি যদি হিন্দু ধর্মের সমর্থক হও, মমতা ব্যানার্জি নিমকাঠ চুরি করে জগন্নাথধাম করেছে মমতা ব্যানার্জির এই অবস্থা হয়নি। আমাদের মূর্তি তো মার্বেলের ছিল। আমাদের বাড়িতেই তো আছে। আপনাদের অনেকের বাড়িতেই আছে। ওটা নিয়ে এসেছেন দ্বৈতপতি। যে জায়গা থেকে বলা হচ্ছে সেই জায়গা থেকে নয়। তাকে ডাকা হয়েছিল শুনেছি। তিনি স্ট্রেট বলে দিয়েছেন, তোমরা যেটা বলেছ সেটা নয়। আমি আমার অন্য জায়গা থেকে করেছি। তাকে আবার কোয়েশ্চেন করা হয়েছিল তুমি কেন পুজো করতে গিয়েছিলে? নোটিফিকেশন দিয়েছে কেউ যাবে না জগন্নাথধামে। কোনও পুরোহিত। আবার তাকে বলা হচ্ছে, কী একটা যেন বলা হচ্ছে। তিনটে পয়েন্ট বলেছে। কোনও একটা মিডিয়াতে। এত গায়ে লাগছে কেন? আমরা তো সবাই পুরীতে যাই। আমরা তো এই প্রশ্ন করি না। আমি তো পুরীতে গেলে আরএসএস বিক্ষোভ দেখায়, বিজেপি বিক্ষোভ দেখায়। ভুলে গেছেন। লজ্জা করে না।’
এবার পুরীর দ্বৈতাপতির কথা উল্লেখ করে মুখ্য়মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে নিমকাঠের কথা বলা হচ্ছে সেটা ‘ওই জায়গা’ থেকে নয়। তবে সূত্রের খবর, ওড়িশা সরকার পুরো বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। বাস্তবিকই যদি পুরীর বাড়তি নিমকাঠ দিঘার মূর্তিতে কাজে লেগে থাকে ও তা যদি তদন্তে প্রমাণিত হয় তবে ফের বড় অস্বস্তি অপেক্ষা করছে বাংলার জন্য।
অনেকের মতে, একে তো চাকরিচুরি, বালি চুরি, কয়লা চুরি সহ নানা ক্ষেত্রে বদনামের দায় বইতে হচ্ছে, এবার আবার নিমকাঠ!