একটা-দু'টো নয়, একসঙ্গে ২৪টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট-সহ ঢাকার বিমানে ওঠার আগেই পাকড়াও করা হল এক যুবককে। জানা গিয়েছে, তিনি হাওড়া জেলার পাঁচলার বাসিন্দা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতা (দমদম) বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উড়ান ধরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, ইমিগ্রেশনের নিয়মাবলী মেটানোর পর সিকিউরিটি চেকিংয়ের সময়েই তাঁর কাছ থেকে ২৪টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। এরপর আর কালক্ষেপ করা হয়নি। ওই যুবককে আটক করে সরাসরি তুলে দেওয়া হয় অভিবাসন দফতরের হাতে। যদিও শেষমেশ ওই যুবককে তারা ছেড়ে দেয়! কিন্তু কেন?
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, ওই যুবকের হাতব্যাগে যে ২৪টি বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলির একটিও জাল নয়। সবক'টিই আসল। এবং যুবকের নিজের ভারতীয় পাসপোর্টেও কোনও গলদ ছিল না।
জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে, বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের একটা বড় অংশ আজকাল বিদেশে পড়াশোনা করেন। অনেক সময় তাঁরা এমন কোনও দেশে পড়াশোনা করতে যান, যে দেশের কোনও দূতাবাস বাংলাদেশে নেই। কিন্তু ভারতে আছে।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যুরিয়র সংস্থা বা এজেন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশি ছাত্রদের পাসপোর্ট প্রথমে ভারতে পাঠানো হয়। তারপর সেগুলি পৌঁছয় সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসে। তারা সেই দেশের ভিসা মঞ্জুর করলে সেই ভিসা-সহ পাসপোর্ট আবার বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
আবার, যদি কখনও ভিসার আবেদন বাতিল হয়ে যায়, তাহলেও একইভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে পাসপোর্টগুলি ফেরত পাঠানো হয়। পুরো কাজটা লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোনও ক্যুরিয়র সংস্থা বা এজেন্সি করে।
জানা গিয়েছে, হাওড়ার পাঁচলার বাসিন্দা ওই যুবকের কাছ থেকে যে ২৪টি পাসপোর্ট পাওয়া যায়, সেগুলি ভিসা না পাওয়া পাসপোর্ট। বাল্টিক সাগর লাগোয়া, উত্তর ইউরোপের একটি দেশ - এস্টোনিয়ার স্টুডেন্টস ভিসা পাওয়ার জন্য সেগুলি নয়া দিল্লিতে তাদের দূতাবাসে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, সেই আবেদন মঞ্জুর হয়নি। তাই কেবলমাত্র পাসপোর্টগুলিই ঢাকায় ফেরত পাঠাতে বলা হয়।
হাওড়ার পাঁচলার যুবকের দাবি, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট ক্যুরিয়র কোম্পানির সঙ্গে তাঁর পরিচয় রয়েছে। তারাই তাঁকে অনুরোধ করে, যদি কোনওভাবে পাসপোর্টগুলি ফেরত পাঠানোর ব্য়বস্থা করা যায়। তাই তিনি নিজেই পাসপোর্টগুলি নিয়ে বাংলাদেশ রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই যুবককে আটক করে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারপর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।