জনজাতি সংঘর্ষে গত কয়েকদিন ধরে উতপ্ত হয়ে রয়েছে মণিপুর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নামাতে হয়েছে সেনা। উন্মত্ত জনতার হাতে খুন হয়েছেন আয়কর আধিকারিক, সিআরপিএফ জওয়ান। পরিস্থিতি শান্ত করতে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে মণিপুর সরকার। অশান্তি ছড়িয়েছে রাজধানী ইমফলেও। সেখানে আটকে রয়েছে বহু বাঙালি পড়ুয়া। নবান্নের উদ্যোগে আজ মণিপুর থেকে নিরাপদে ঘরে ফিরেছেন এ রাজ্যের ১৮ জন পড়ুয়া। মণিপুরের অশান্তি নিয়ে সোমবার উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মণিপুরে কেন্দ্রীয় দল কেন যাচ্ছে না? সেই প্রশ্ন তুলে মণিপুরের ঘটনাকে ‘ম্যান মেড প্রবলেম’ বলে মন্তব্য করলেন মমতা।
সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘কেন্দ্রের দল মণিপুরে যাচ্ছে না কেন? আমাদের এখানে কিছু হলে ১০টা কেন্দ্রীয় দল পাঠায়। এ রাজ্যে না এসে কেন্দ্রীয় দলের মণিপুরে যাওয়া উচিত। ভোট আসবে যাবে মণিপুরকে এখন অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থা দুর্ভাগ্যজনক। মণিপুরের ঘটনা ম্যান মেড প্রবলেম। মানবিকতা না থাকলে রাজনীতি হয় না।’ মণিপুরে আটকে থাকা বাংলার বাসিন্দাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী। এ জন্য নবান্নে ২৪ ঘণ্টার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর হল ০৩৩ ২২১৪-৩৫২৬ এবং ০৩৩২২৫৩-৫১৮৫। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ রাজ্যের আরও ৬৮ জন বাসিন্দা সেখানে আটকে রয়েছেন। মণিপুরে আটকে থাকা ১৮৫ জন বাঙালির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে। ১৮ জন পড়ুয়া সহ ২৫ জনকে বিমানে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। এখনও রাজ্যের বহু পড়ুয়া মণিপুরে আটকে রয়েছেন। তাঁরা ভয়ে বাইরে বের হতে পারছেন না। আমরা মণিপুর সরকার এবং অসম রাইফেলসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে চলেছি। ভিন রাজ্যের পড়ুয়াদের এই রাজ্যে আনা হয়েছে। যার মধ্যে অন্ধপ্রদেশের ১৪০, তেলাঙ্গানার ২৬ জন পড়ুয়া, রাজস্থানের ৩০ পড়ুয়াকে আমরা নিয়ে এসেছি। ভিন রাজ্যের পড়ুয়ারা ভালো আছেন। তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছি। রাজ্যের তরফে সেফ প্যাসেজের জন্য মণিপুর সরকারকে আবেদন জানিয়েছি।’ মণিপুরে মৃতের সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মমতা বলেন, ‘মণিপুরে কত মানুষ মারা গিয়েছেন তা জানাচ্ছে না সরকার। তবে মানুষ সংখ্যাটা জানতে চাইছে। মণিপুর সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। রাজ্যের তরফে কাল রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান পালন করা হবে।’