মন্দারমণিতে ১৪০টির বেশি হোটেল ও রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলায় এবার অস্বস্তিতে পড়ল রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। পরিবেশ আদালতের নির্দেশে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন এইসব হোটেল ভাঙার নোটিশ জারি করেছিল। সেই সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে কেন্দ্র কোনও পরিষ্কার অবস্থান জানাতে পারেনি। তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ করেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: মন্দারমণিতে ১৪০ টি ‘অবৈধ’ হোটেল, রিসর্ট ভেঙে ফেলার নির্দেশ, হাইকোর্টে মালিকরা
শুক্রবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি স্পষ্ট জানান, রাজ্য একদিকে হোটেল মালিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, আর কেন্দ্র প্রশ্নের জবাবই দিতে পারছে না। উল্লেখ্য, হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, মন্দারমণির মতো উপকূলবর্তী এলাকায় ‘কোস্টাল রেগুলেশন জোন’ চিহ্নিত আছে কিনা। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের কোনও নির্দিষ্ট সীমারেখা বা নির্দেশিকা নেই। আদালত এই উত্তর শুনে বিস্ময়প্রকাশ করে জানায়, উপকূলবর্তী এলাকায় নির্মাণ বিধিনিষেধ না থাকলে পরিবেশ আদালত কোন ভিত্তিতে নির্দেশ দিয়েছে, কেন্দ্র কেন নিশ্চিত করতে পারছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে প্রশ্ন।
মামলার সূত্রপাত মাস কয়েক আগে। মন্দারমণিতে উপকূলে গড়ে ওঠা হোটেল ও রেস্তরাঁগুলিকে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে নোটিশ পাঠানো হয়। সেগুলি ভেঙে ফেলার কথা জানানো হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের ওই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেন। এদিকে, বিষয়টিও আদালতে পৌঁছায়।
এদিন রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিবেশ সংক্রান্ত নির্মাণ অনুমতির দায়িত্ব একান্তই কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনে। রাজ্যের ভূমিকা এখানে সীমিত। যদিও শুনানিতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশকে কীভাবে রাজ্যের হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করা যায়, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কেন্দ্রের আইনজীবী। বিচারপতি জানান, আইন মেনে হোটেলগুলি চালানো যায় কি না, তা দেখবে আদালত।
এদিন, মামলার শুনানি শেষে হোটেল ভাঙা নিয়ে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে আদালত। নির্দেশ অনুযায়ী, ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনও হোটেল বা রেস্তোরাঁ ভাঙা যাবে না। সেই সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রকে অবস্থান স্পষ্ট করে জানাতে বলেছে হাইকোর্ট।