আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখতে হবে বলে যে নির্দেশ আজ কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে তা জমা পড়লেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে। পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সিডি বা অন্য কোনও ডিভাইসে ফুটেজ রেকর্ড করতে। তার শংসাপত্র নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ।
কলকাতা হাইকোর্ট। ছবি সৌজন্য : পিটিআই
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় যুবককে ডেকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। যদিও পুলিশের দাবি, ওই যুবকের মাথায় ব্রেন টিউমার ছিল। সেটা ফেটে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে। এই রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। তাতে আজ, শুক্রবার পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, মৃত যুবকের মরদেহ অবিলম্বে কলকাতা পুলিশ মর্গ থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
তবে মৃতের পরিবারের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের আবেদনে সাড়া দেয়নি কলকাতা হাইকোর্ট। পরিবার এই মামলায় যুক্ত হয়ে বক্তব্য জানাতে পারবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে আদালত। আজ, শুক্রবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, পরিবার হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য আদালতে জমা করতে পারবে। তার পরই সিদ্ধান্ত নেবে কলকাতা হাইকোর্ট। আবার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। কলকাতা পুলিশ আজ আদালতে এই মামলার কেস ডায়েরি ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেয়।
এদিকে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে রাখতে হবে বলে যে নির্দেশ আজ কলকাতা হাইকোর্ট দিয়েছে তা জমা পড়লেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে। তাই ফুটেজ ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সিডি বা অন্য কোনও ডিভাইসে ফুটেজ রেকর্ড করতে। তার শংসাপত্র নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ। মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করে বলেন, ‘আমহার্স্ট থানার সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রত্যেক থানায় সিসিটিভি থাকা বাধ্যতামূলক। তাই নির্দেশ মেনে ফুটেজ দেখানো হয়। সাধারণ মানুষকে ফোন করে পুলিশ এভাবে ডাকতে পারে না। তবে তলব করা যেতে পারত।’
অন্যদিকে ওই যুবক ব্যবসায়ীর পরিবারের পক্ষ থেকে আইনজীবী অমৃতা পাণ্ডের আজ আদালতের কাছে আবেদন করেন, দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ এই ঘটনায় দেওয়া হোক। রেলের হাসপাতালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হোক। যদিও প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘দ্বিতীয় বা তৃতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ তখনই দেওয়া হয়, যখন দেখা যায় যে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু এখানে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন কথার উল্লেখ নেই। ব্রেন হেমারেজের জেরেই মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও অবৈধ পদক্ষেপ করেছে বলে আমরা মনে করছি না।’