বাড়িতে মেয়ের বিয়ে বলে কথা। ধুমধাম করেই তো দিতে হবে। পরিবারের সদস্যরা সেই আয়োজনই করেছিলেন। সাজানো থেকে শুরু করে খানাপিনা একেবারে ঢেলে করা হয়েছিল। বিয়েবাড়ির ওই প্রীতিভোজে আত্মীয়–পরিজন, বন্ধুবান্ধব মিলে তখন বিশাল সমাগম। সকলেই মেতে উঠেছেন বিয়ের অনুষ্ঠান। গান–বাজনা, ধুমধাম নাচ থেকে শুরু করে সাজসজ্জা–বাহারি আলোয় সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে বিবাহবাসর। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। কারণ ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হয় পুলিশ। আর কোনও কথা শুনতে না চেয়ে গ্রেফতার করে কনের বাবা–মাকে। এই ঘটনায় তুমুল আলোড়ন পড়ে যায়। কেন গ্রেফতার করা হল? উঠে যায় প্রশ্ন।
এই প্রশ্নের সন্ধান করতেই স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের অন্তর্গত ১৩ নম্বর বিষ্ণুপুর অঞ্চলের মাধবচক গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। এই গ্রামের বাসিন্দা মধুসূদন বর্মনের মেয়ের সেখানে বিবাহ বাসর বসেছিল। মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী অর্থাৎ ১৬ বছর বয়স। নাবালিকার বিয়ে দেওয়া অপরাধ। সেই খবরই পৌঁছে গিয়েছিল পুলিশের কাছে। আর যার সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হচ্ছিল ওই নাবালিকার তার বয়স ১৮। এই বিষয়টি যাতে কেউ জানতে না পারে তাই গোপনে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, সবং থানার পুলিশ গিয়ে প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান থামিয়ে বিয়ের আসর থেকে নাবালিকা উদ্ধার করে। আর গ্রেফতার করে কনের বাবা–মাকে।
আরও পড়ুন: খুন হওয়া বাবা–ছেলের বাড়িতে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল, শিশুদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিতে চান সাংসদ
এই ঘটনায় ওই পরিবারের মান–সম্মান জোর ধাক্কা খায়। সবং থানার পুলিশ, বিডিও, শিশু উন্নয়ন প্রকল্প কর্মকর্তা এবং অফিসের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওই নাবালিকার বিয়ের প্রীতিভোজে পৌঁছন। তারপরই কড়া পদক্ষেপ করা হয়। বাবা–মাকে গ্রেফতার করার পর রাতে ওই নাবালিকাকে হোমে পাঠানো হয়। পাত্রীর মা এবং বাবার নাম মধুসূদন বর্মন এবং পদ্মাবতী বর্মন। ধৃতদের আজ, রবিবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে তোলা হয়েছে। এই ঘটনা যখন ঘটছে তখন বেগতিক টের পেয়ে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে চম্পট দেয় ছেলের পরিবারের সদস্যরা। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।