শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ এবং সেইসঙ্গে এলাকার ছেলেমেয়েদের স্বনির্ভর করে তোলার পাঠ - মূলত এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ১৫ একর জমি চেয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ। মন্দারমণিতে সেই জায়গা দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। জানা গিয়েছে, রামকৃষ্ণ মিশনের যদি ওই জমি পছন্দ হয়, সেক্ষেত্রে রাজ্যের তরফে তাদের ওই জমি দিতে কোনও আপত্তি নেই। বিষয়টি নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।মিশনের লক্ষ্য হল - একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা। আগেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দিঘা সারদা রামকৃষ্ণ সেবাকেন্দ্রকে জানানো হয়েছিল, তারা চাইলে মন্দারমণি এবং সিলামপুর মৌজায় একটি জমি নিতে পারে। সেখানকার ২১১, ১১৭, ১০২ দাগ নম্বরে ১৩ একরের একটি খাস জমি পড়ে রয়েছে।সেই সময় মিশনের তরফে প্রতিনিধিরা ওই জমি পরিদর্শন করেন। কিন্তু, দিঘা সারদা রামকৃষ্ণ সেবাকেন্দ্রের সম্পাদক স্বামী নিত্যবোধানন্দ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট জমিটির একাংশ সিআরজেড এলাকার মধ্যে পড়ছে। তাই, বিকল্প জমি দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এই সপ্তাহেই জেলাশাসকের দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বামী নিত্যবোধানন্দ।উল্লেখ্য, সারা ভারতের মতো বাংলাতেও আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্য একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের ধাঁচে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। যার মধ্যে ঝাড়গ্রামের স্কুলটির দায়িত্ব রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দেওয়ার (২০১৬ সালে) পরই সেটি সাফল্য়ের মুখ দেখে। তাই, মনে করা হচ্ছে, আরও একটি এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হলে তাতে এলাকার যুবসমাজ উপকৃত হবে।যদিও এই উদ্যোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বামেরা। তাদের বক্তব্য, মন্দারমণির সংশ্লিষ্ট জমিটি অত্যন্ত মূল্যবান। সেটি রামকৃষ্ণ মিশনের হাতে তুলে দিলে তাতে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন কীভাবে সম্ভব, সেটা স্পষ্ট হচ্ছে না।সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'শুনেছি মন্দারমণিতে একটা মূল্যবান জমি রামকৃষ্ণ মিশনকে দেওয়া হবে। ওখানে প্রকৃত অর্থে কী উন্নয়ন হবে, জানি না। আসলে এরকম উদ্যোগকে হাতিয়ার করে রাজনীতি করেন মুখ্যমন্ত্রী।'অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি জানিয়েছেন, 'রামকৃষ্ণ মিশনকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি জায়গা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। এই ব্যাপারে রামকৃষ্ণ মিশনের সম্মতি পাওয়ার পর সেটি প্রস্তাব আকারে রাজ্যের কাছে পাঠানো হবে। চূড়ান্ত সম্মতি পেলে জমি তুলে দেওয়া হবে রামকৃষ্ণ মিশনকে।'