একটা সময় মনে হচ্ছিল এজবাস্টন টেস্টে ভারতীয় দলের জয়ের সম্ভাবনা ক্ষিণ হতে চলেছে। কারণ জেমি স্মিথ এবং হ্যারি ব্রুক টিম ইন্ডিয়ার হাতের নাগালের বাইরে ম্যাচ নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। এই ম্যাচ ইংল্যান্ডের পক্ষে জেতা কঠিন,সেকথা অস্বীকার করার কোনও প্রশ্নই নেই। তবে টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে এই টেস্ট যদি ইংরেজরা ড্রও করতে পারে, সেটাও তাঁদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি হতে চলেছে।
প্রথম ইনিংসে স্মিথ এবং ব্রুক মিলে নিজেদের মধ্যে ৩০৩ রানের পার্টনারশিপ করেন। এরপর আকাশদীপ এবং মহম্মদ সিরাজ এসে তাঁদেরকে ফিরিয়ে দ্রুতই ইংল্যান্ড ইনিংসে জবনিকা টানেন। ৩৮৭/৫ থেকে ৪০৭ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংসের। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সিরাজের ঝুলিতে আসে ছয় উইকেট, আকাশ দীপের ঝুলিতে ছিল ৪ উইকেট।
ম্যাচের তৃতীয় দিনের শুরুতেই জো রুট এবং বেন স্টোক্সকে আউট করেছিলেন সিরাজ। দেখে মনে হচ্ছিল, তখনই খেলা ভারতের দখলে, কিন্তু এরপর ব্রুক এবং স্মিথের পার্টনারশিপটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। শেষদিকে ফের সিরাজ নেন ব্রাইডন কার্স, জোস টঙ্গ এবং শোয়েব বাশিরের উইকেট। বুমরাহর অনুপস্থিতিতে জ্বলে ওঠেন এই তারকা পেসার।
তৃতীয় দিনের শেষে সিরাজ বলছিলেন, ‘আকাশ দীপ এখনও পর্যন্ত সবে ৩-৪টে টেস্ট খেলেছে। প্রসিধ কৃষ্ণাও তাই, আমি তাও ৩৮টা টেস্ট খেলেছি। তাই আমার লক্ষ্য থাকে নিজের সেরাটা দেওয়া এবং ধারাবাহিকভাবেই লাইন লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করা। আমাদের যেহেতু প্রায় ৬০০ রান উঠেছে, তাই আমি চেষ্টা করেছি যতটা বেশি সম্ভব ইংল্যান্ডের ওপর চাপ তৈরি করা যায়। আমি দায়িত্ব নিয়ে পছন্দ করি, চ্যালেঞ্জ নিতেও ভালোই লাগে। কারণ আমি আমার জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে এসেছি। তাই চ্যালেঞ্জ নিতে বা যখন দায়িত্ব আমার কাঁধে আসে, তখন আমি ভালো পারফরমেন্স দেখাই। ’।
তৃতীয় দিনের শেষে ভারতের স্কোর ১ উইকেটে ৬৪। অর্থাৎ টিম ইন্ডিয়ার লিড এখন ২৪৪। এই লিড যদি ৪২০ বা ৪৫০ পেরিয়ে যায়, তাহলে ইনিংস ডিক্লিয়ার করে দিতে পারে ভারত। সেক্ষেত্রে হাতে দেড় দিন মতো সময় থাকলে, বোলাররাও ইংরেজ ব্যাটারদের আউট করে উঠে পর্যাপ্ত সময় পাবেন। সেই নিয়ে সিরাজ বলছেন, ‘আমরা এখন অনেকটাই এগিয়ে আছি, তবে আমাদের টার্গেট থাকবে যত বেশি সম্ভব রান করা। অ্যাটাকিং মাইন্ডে খেলা, যাতে বোলারদের জন্য সুবিধা হয়। পিচ আসতে আসতে স্লো হয়ে আসছে, এক জায়গায় বোলিং করলে হবে না। রান একবার বেরনো শুরু হয়ে গেলে, সেটা আটকানো কঠিন। তাই ধৈর্য্য রাখতে হবে। আমি অনেক বছর ধরেই অপেক্ষা করছিলাম একটা ফাইভ উইকেট হল পাওয়ার, বারবারই চারটে উইকেট নিয়ে থেমে যাচ্ছিলাম, এবার বোলিং ভালোই হয়েছে। মূহূর্তটা আমার কাছে সত্যিই স্পেশাল। কারণ ইংল্যান্ডে এটাই প্রথম ৬ উইকেট পেলাম। আমি একটা উইকেট পেলে দলেরও আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তাই সেটাই পাওয়ার চেষ্টা করি ’।