প্রায় আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। আজ, সোমবার দেশের মাটিতে পা রাখলেন বাংলাদেশে বন্দি থাকা ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী। সোমবার দুপুর ১২টা নাগাদ তাঁদের ট্রলারে চাপিয়ে গঙ্গাসাগরে নিয়ে আসা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা–সহ জেলা প্রশাসনের অফিসাররা। গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি দেখতে আজই গঙ্গাসাগরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখা করেন। আর কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে ‘গঙ্গাসাগর সেতু’ নির্মাণের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই মৎস্যজীবীদের ভারতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তৎপর হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কোনও অনুদান দেন না বলে অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কুম্ভমেলায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্র। যেখানে এক কোটির মতো মানুষ গঙ্গাসাগরে এলেও কোনও সাহায্য করা হয় না বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছিলাম এখানে সাহায্য করতে। যাতে এখানে আসা পুণ্যার্থীরা সহজে পরিষেবা পেতে পারেন। ওদের দিকে তিন–চার বছর তাকিয়ে ছিলাম। কিন্তু ওরা টাকা দেয়নি। মানে আর দেবেও না। তাই আমরাই সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের খাবারের মান কেমন? পরীক্ষা হবে ল্যাবরেটরিতে, জারি বিজ্ঞপ্তি
আরও পড়ুন: মুড়িগঙ্গার উপর দীর্ঘ ‘গঙ্গাসাগর সেতু’ নির্মাণ হতে চলেছে, জুড়তে চলেছে সাগরদ্বীপ
গঙ্গাসাগর মেলার প্রাক্কালে এলাকা পরিদর্শন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এদিনই সাগরে পৌঁছে বাংলাদেশ থেকে ফেরা ৯৫ জন মৎস্যজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক প্রকল্পের কথাও জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, ‘আমরা একটা সমুদ্রসাথী প্রকল্প চালু করব। ২ লক্ষ মৎস্যজীবী উপকৃত হবেন। যে দু’মাস মাছ ধরতে যেতে পারেন না, সেই সময় এই টাকা রাজ্য সরকার দেবে। আর মৎস্যজীবীর মৃত্যু হলে ২ লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। এটা মৎস্যবন্ধু প্রকল্প। তার সঙ্গে মৎস্যজীবীদের পেনশন দেওয়া হবে। মৎস্যজীবীদের লোনের জন্য ক্রেডিট কার্ড করে দেওয়া হয়েছে।’
এছাড়া ‘গঙ্গাসাগর সেতু’ গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। যেখানে স্থলভাগের মূল ভুখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে যেতে চলেছে সাগরদ্বীপ। এই সেতু আগামী চার বছরের মধ্যে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতর। আর এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে পুণ্যার্থীদের বিরাট উপকার হবে। আগামী ২০২৯ সালের জানুয়ারি মাসে যখন পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলায় আসবেন তখন কলকাতা থেকে সোজা গাড়ি নিয়ে কপিল মুনির আশ্রম পর্যন্ত চলে আসতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘এই সেতু কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি করে দেওয়ার কথা। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমায় কথা দিয়েছিলেন এই সেতু তৈরি করে দেবেন। কিন্তু কথা রাখেননি। তাই আমরাই গঙ্গাসাগর সেতু তৈরি করে দেবো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ডিপিআর হয়ে গিয়েছে। টেন্ডারও পেয়ে গিয়েছে।’