রামপুরহাট গণহত্যা নিয়ে ঘরে বাইরে লেজেগোবরে অবস্থা তৃণমূলের। পরিস্থিতি এমনই যে বীরভূমে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়ে গিয়েছে গৃহযুদ্ধ। ওদিকে বিরোধীদের সৌজন্য দেশ ও দুনিয়ায় পুড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ। সিট গঠন করে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার শেষ চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে আদালতের নির্দেশে। এই পরিস্থিতিতে রামপুরহাট গণহত্যার দায় কী ভাবে এড়ানো যায় সেজন্য তথ্য অনুসন্ধান শুরু করল তৃণমূল। তবে এই দায়িত্বে কারা রয়েছেন তা গোপন রাখা হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রামপুরহাট গণহত্যায় কারা যুক্ত তা জানতে এবার নিজেদের মতো করে তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করা শুরু করেছে দল। স্থানীয় ও আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার দিন কারা কারা হামলা চালিয়েছিল, তারা তৃণমূলের লোক কি না তা জানার চেষ্টা চলছে। সঙ্গে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও জোগাড় করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। এব্যাপারে বীরভূমের বিভিন্ন নেতার কাছেও রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে দল।
রাজনৈতিক বিশেজ্ঞদের মতে, রামপুরহাট গণহত্যা নিয়ে মহা বিপদে পড়েছে তৃণমূল। আক্রান্ত ও আক্রমণকারী দুই পক্ষই তৃণমূল সমর্থক। আবার যে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে তাও তৃণমূল সরকার দ্বারা পরিচালিত। ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে বিজেপির দিকে অভিযোগের তির ঘোরানোর চেষ্টা হলেও তা খারিজ করে দিয়েছেন আক্রান্তরা। তার মধ্যে আবার ভাদু শেখ দলের জনপ্রতিনিধি, আনারুল হোসেন ব্লক সভাপতি। তাদের দায়ও এড়ানোর কোনও রাস্তা নেই তৃণমূলের কাছে। ফলে নতুন তথ্য জোগাড় করে এই ঘটনার দায় থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার পথ খুঁজছে তারা।
বলে রাখি, রামপুরহাট গণহত্যায় মূল অভিযুক্ত আনারুল হোসেন কার ঘনিষ্ঠ তা নিয়ে দায় ঝাড়ার চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দাবি, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুপারিশে আনারুলকে ব্লক সভাপতি রেখেছিলেন। দাবি প্রমাণে আশিসবাবুর সুপারিশপত্র ফাঁস করেছেন তিনি। পালটা আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে দলীয় চিঠি ফাঁস করে দাবি করা হয়েছে, রামপুরহাট পুর নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিত কমিটিতে সবার ওপরে আনারুলের নাম লিখেছিলেন অনুব্রত।