আড়ম্বর বা অতিরিক্ত জাঁকজমক নয়, বদলে আসন্ন উনির্বাচনের আগে প্রচারের জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকের উপরই জোর দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র উল্লেখ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, আগামী ১৩ নভেম্বর রাজ্য়ের যে ছ'টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তার সবক'টিতে ঘাস ফুল ফোটার বিষয়ে নিশ্চিত দলের স্থানীয় এবং শীর্ষ নেতৃত্ব।
তাঁদের বক্তব্য, আর জি করের ঘটনা নিয়ে যতই 'অপপ্রচার' হোক না কেন, মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকেই ভোট দেবে! তাই, উপনির্বাচনের প্রচারে অতিরিক্ত জাঁকজমক নাকি দলের অভিজ্ঞ নেতা ও কর্মীরাই সেভাবে চাইছেন না।
অন্যদিকে, শারদোৎসব ও লক্ষ্মীপুজো শেষ হলেও এখনও কালীপুজো বাকি। তারপর একে একে রয়েছে ছট পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো ও রাস পূর্ণিমা। উৎসবের এই আবহে প্রচার নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যেও রয়েছে গা-ছাড়া মনোভাব।
মূলত, এইসব কারণেই আসন্ন উপনির্বাচনের প্রচার কৌশল বদলে ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতা ও কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যাতে ভোটারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করেন এবং ঘরোয়া আলোচনায় তাঁদের দাবি-দাওয়া, অভাব-অভিযোগ শোনেন।
তারপর সেই কেন্দ্রের প্রার্থীকে বাসিন্দাদের ওইসব দাবি-দাওয়া সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে হবে। একইসঙ্গে, বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যে তৃণমূল যদি ভোটে যেতে, তাহলে সেই নবনির্বাচিত বিধায়ক অবশ্যই মানুষের স্বার্থে কাজ করবেন।
একইসঙ্গে, টিকিট পাওয়াকে কেন্দ্র করে মনোমালিন্যের জেরে কোথাও যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া না দেয়, সেই বিষয়েও নজর রাখার জন্য় স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৩ নভেম্বর যে ছ'টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে, সেগুলি হল - মেদিনীপুর, তালড্যাংরা, নৈহাটি, হাড়োয়া, সিতাই ও মাদারিহাট। যার মধ্যে প্রথম পাঁচটি কেন্দ্র তৃণমূলের দখলেই ছিল। আর, মাদারিহাটে জিতেছিল বিজেপি।
প্রসঙ্গত, আর জি কাণ্ডের পর শহর কলকাতা-সহ রাজ্য ও দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদের ঝড় উঠলেও সময়ের সঙ্গে সেই বিরোধের আঁচ এখন অনেকটাই স্তিমিত। তাছাড়া, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের বক্তব্য হল, এই আন্দোলন ছিল মূলত শহর বা কলকাতাকেন্দ্রিক।
অন্যদিকে, এখনও এ রাজ্যে বিরোধীদের সংগঠন তৃণমূলের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এই অবস্থায় তৃণমূলের পক্ষে তাদের গতবারের জেতা পাঁচটি আসন পুনরায় জেতা কঠিন হবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা। তৃণমূল অবশ্য দাবি করছে, তারা মাদারিহাটেও জয়লাভ করবে।