মালদার দাপুটে তৃণমূল নেতা দুলাল সরকারকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। একের পর এক গুলি। ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় তৃণমূল নেতার শরীর। মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথাতেও গুলি। সিসি ক্য়ামেরায় ধরা পড়েছে দুষ্কৃতীদের ভেতরে প্রবেশের সেই হাড়হিম করা ছবি।
এদিকে খুনের কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ বৃহস্পতিবারই দুজনকে গ্রেফতার করেছিল। একজন হলেন মহম্মদ সামি আখতার। আর অপরজন হলেন টিঙ্কু ঘোষ। টিঙ্কু ইংরেজবাজারের গাবগাছি এলাকার বাসিন্দা। আর মহম্মদ সামি আখতার হলেন বিহারের কাটিহারের বাসিন্দা। শুক্রবার সকালে আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এই ঘটনায়। সম্ভবত বিহারে পালানোর ছক ছিল তাদের।
ঠিক কীভাবে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল?
সূত্রের খবর, দুলাল সরকারকে এর আগেও টার্গেট করেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু বারই বারই ব্যর্থ হয়েছে। এরপর ঠিক ছিল বড়দিনের অনুষ্ঠানে দুলালকে শেষ করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেই সময় দুলালকে একা পাওয়া যায়নি। এরপর প্ল্যান বি ছকে ফেলে দুষ্কৃতীরা। গত কয়েকদিন ধরেই দুলালের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। তিনি কোথায় যাচ্ছেন, নিয়মিত কোথায় যান সেগুলির উপর খেয়াল রাখা হচ্ছিল। মূলত দেখা হচ্ছিল তিনি কখন একলা থাকেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগানো হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন অনেকে।
তবে দুলাল ঘনিষ্ঠদের মতে বরাবরই কিছুটা ডাকাবুকো ধরনের ছিলেন তিনি। ভয়ডর সেভাবে ছিল না। দীর্ঘদিনের পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। এমনকী সূত্রের খবর, সেদিন প্লাইউড কারখানার দিকে যাচ্ছিলেন দুলাল। কর্মীদের বেতন মেটানোর কথা ছিল। এদিকে সেই সময় বাইকে করে কয়েকজন গাড়ির পেছনে আসছেন এটা বুঝতে পারেন দুলালের গাড়ির চালক। সেটা তিনি সাবধানও করেছিলেন দাদাকে। কিন্তু তিনি শুনতে চাননি। গাড়ি থেকে নেমে পড়েন দুলাল সরকার।
তবে দুলাল সরকারকে আচমকা এসে খুন করে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা এমনটা নয়। কার্যত ১০ দিন ধরে রেইকি করেছিল দুষ্কৃতীরা। তার গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছিল। মূলত কোন সময়টাতে দুলাল একলা থাকছেন সেটা দেখা হচ্ছিল।
ইংরেজবাজার পুরসভার পুরপ্রধান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানিয়েছেন, ১০ লাখ টাকা সুপারি দিয়ে বিহার থেকে দুষ্কৃতী এনে দুলালকে খুন করা হয়েছে।
এদিকে খুনের পরেই কার্যত এসপির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তোপ দেগেছিলেন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি জানিয়েছিলেন, এসপির অপদার্থতার জন্য় খুন হয়ে গেল।
তবে খুনের পরে অবশ্য় তড়িঘড়ি ময়দানে নামে পুলিশ। একের পর এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। তবে খুনের পেছনে রেষারেষি, পথের কাঁটা সরানো, ঠিক কোন কারণ জড়িত সেটা দেখছে পুলিশ।