বাংলায় ভূগর্ভস্থ জল নিয়ে জল নিয়ে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট সামনে এসেছে। তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের কয়েকশো ব্লকের ভূগর্ভস্থ জলে লুকিয়ে আছে বিপদ। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ভূগর্ভস্থ জল নিয়ে একটি রিপোর্ট সামনে এনেছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যের ৩৪৫ টি ব্লকের মধ্যে ১০৬ টি ব্লকের জলে রয়েছে আর্সেনিক ও ফ্লোরাইড। যদিও অনেক ব্লকেই এই দুটির রাসায়নিকের মাত্রা কম। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, জলে এই দুটি রাসায়নিকের মাত্রা কম হলেও প্রতিদিন পান করার ফলে শরীরে জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি অজান্তেই বাংলার বহু মানুষ বিষ পান করছেন। কারণ এখনও বহু এলাকায় মানুষ ভূগর্ভস্থ জল পান করে থাকেন।
আরও পড়ুন: ভূগর্ভস্থ জলের যথেচ্ছ ব্যবহারে নামছে জলস্তর! কোন বিপদে পড়তে পারে কলকাতা?
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলায় ভূগর্ভস্থ জলে ফ্লোরাইড সবচেয়ে বেশি পুরুলিয়ায়। এখানে বহু ব্লকের ভূগর্ভস্থ জলে এই রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও, বাঁকুড়ার ছাতনা, শালতোড়া, বড়জোড়া প্রভৃতি ব্লকের জলেও এই রাসায়নিক রয়েছে। এছাড়াও, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ভূগর্ভস্থ জলে ফ্লোরাইড বেশি মাত্রায় রয়েছে। গবেষকরা বলছেন, ‘এখানে লিটার জলে ১.৫ মিলিগ্রাম ফ্লোরাইড মিশে রয়েছে। যা খুবই উদ্বেগজনক। এদিকে, আর্সেনিক বেশি রয়েছে মুর্শিদাবাদে। এছাড়াও নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন ব্লকেও আর্সেনিক পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে ভূগর্ভস্থ জল সেচের মাধ্যমে আর্সেনিক দূষণ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। চাষের জন্য ভূগর্ভস্থ জল বেশি প্রয়োজন হয়। তাতে ধান গাছ সহজেই আর্সেনিক শোষণ করতে পারে। আর পরে খাদ্যের মাধ্যমে সেই আর্সেনিক মানব শরীরে প্রবেশ করছে। এরফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছে। যদিও অন্য রাজ্যগুলির যে এই আর্সেনিক দূষণ থেকে নিরাপদ নয়, সে বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রের রিপোর্টে। কারণ এই সমস্ত রাজ্যে উৎপাদিত ধান বা চাল অন্য রাজ্যেও পাঠানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ফলে সমস্যা হচ্ছে। এতে মাটির নিচে নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় জল দূষণ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এখনই সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে আরও বড় সমস্যা হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, এই রাসায়নিক জল শোধন করে পান করা উচিত। এছাড়াও, চাষের জন্যও এই জল বিপজ্জনক বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।