আজ, মঙ্গলবার থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয় তারা মায়ের গর্ভগৃহ। আবার ভোগের সময় দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকে মন্দির। দেবী দর্শনের জন্য আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না সাধারণ পুণ্যার্থীদের। ভোরে গর্ভগৃহ খোলার পর প্রথম একঘণ্টা সাধারণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা পুণ্যার্থীদের পুজো গ্রহণ করা হবে। বিশেষ লাইনে পুজো দিতে হলে মন্দির কমিটির অফিস থেকে কুপন সংগ্রহ করতে হবে। কৌশিকী অমাবস্যায় সময় এখানে তিলধারণের জায়গা থাকে না। তবে চলতি বছরে বদলে গেল তারাপীঠের বেশ কিছু নিয়ম। আর নতুন নিয়ম চালু হল পৌষ মাসের একেবারে প্রথম দিন থেকেই।
এদিকে এই পৌষ মাসে ভক্তদের ভিড় আরও বাড়ে। কারণ পৌষ মাসে কালীদর্শন একটা বিশেষ বিষয়। কিছুদিন ধরেই তারাপীঠ মন্দিরে চরম বিশৃঙ্খলা চলছিল। মোটা টাকার বিনিময়ে মিলছিল দেবীর দর্শন। তাই সাধারণ লাইনের পুণ্যার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। আবার তেমনই পালাদার সেবাইতদের একাংশ মন্দিরটাকে নিজস্ব সম্পত্তি ভেবে কাজ করছিল। নির্দিষ্ট কোনও সময় মানা হচ্ছিল না পুজো অর্চনার। তাদের ইচ্ছেতেই গর্ভগৃহ খোলা–বন্ধ হচ্ছিল। ভোগ ও আরতিরও নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। রবিবার মন্দির কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন জেলাশাসক বিধান রায়। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে ট্রাস্টি করে দেওয়া হবে। পুণ্যার্থীদের অসুবিধে হয় এমন কিছুই করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: গজরাজের ৫০জনের দল দাপিয়ে বেড়াল জঙ্গল–মাঠে, শীতের ফসল নষ্ট পশ্চিম মেদিনীপুরে
অন্যদিকে এখন নানারকম নিয়ম করা হল। তার মধ্যে রয়েছে—নির্দিষ্ট সময় মন্দির খুলতে হবে এবং বন্ধ করতে হবে, দু’টি লাইন পুজোর জন্য রাখতে হবে। অতিরিক্ত লাইন করা যাবে না, মন্দিরের গর্ভগৃহের ভিতরে গোলাপ জল–আলতা বন্ধ, প্রতিমার চরণ স্পর্শ করা যাবে। প্রতিমাকে জড়িয়ে ধরা যাবে না, মন্দিরে মোবাইল নিয়ে ঢোকা যাবে না। এই বিষয়ে মন্দিরের সেবাইত বলেন, ‘ভক্তদের জন্যই তারাপীঠ। তাঁদের যাতে সুবিধা হয় তাই যৌথ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি, সহ–সভাপতি এবং সেবাইতদের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক করেন এখানের জেলাশাসক। ওই বৈঠকে মন্দিরের নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এইসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া মা তারার মন্দিরে নির্দিষ্ট সময়ে ভোগ নিবেদন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই নিয়মগুলি মন্দিরের ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ভক্তদের সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর করা হয়েছে। এই বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে আজ থেকে শিলামূর্তি স্নানের পর ভোর সাড়ে ৫টায় সকলের জন্য খুলে দেওয়া হয় গর্ভগৃহের দরজা। প্রথম একঘণ্টা সাধারণ লাইনের পুণ্যার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। পরে বিশেষ লাইনের ভক্তদের প্রবেশ করানো হয়। নারকেল ফাটানো, দেবী বিগ্রহে আলতা, অগরু নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিগ্রহের ছবি তোলা নিষিদ্ধ।’