দিঘায় আজ পৌঁছে গিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। অক্ষয় তৃতীয়ার দুপুরে উদ্বোধন করা হবে। সুতরাং এখন সেখানে সাজসাজ রব। চন্দননগরের আলোকসজ্জায় সেজে উঠেছে সৈকতনগরী দিঘার গেট। যেখান দিয়ে প্রবেশ করে পৌঁছে যাওয়া যাবে জগন্নাথধামে। চারিদিকে এখন শুধুই আলোর রোশনাই। কিন্তু অন্ধকারে কারা? এই জগন্নাথ মন্দিরের জন্য জমি অধিগ্রহণে যাঁদের উচ্ছেদ হতে হয়েছে, আজ তাঁরা অন্ধকারে রয়েছেন। কারণ তাঁদের পুনর্বাসন এখনও মেলেনি। তাই তো গরিব পরিবারগুলির চোখে আজ জল। অনেক আশা ছিল, দিদির কাছে। উচ্ছেদের সময় প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা তাঁদের বলেছিলেন ৬ মাসের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে। কিন্তু দিঘার সমুদ্রসৈকত দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও জোটেনি পুনর্বাসন-- তেমনই অভিযোগ।
সালটা ছিল ২০১৮। তারিখ ৬ ডিসেম্বর। দিঘার প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, পুরীর আদলে দিঘায় জগন্নাথ মন্দির গড়ে তোলা হবে। ২০১৯ সালে ১১৬বি জাতীয় সড়ক সংলগ্ন ভগীব্রহ্মপুর মৌজায় ২০ একর জমি মন্দিরের জন্য চিহ্নিত করে দিঘা–শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ। ওই কুড়ি একর জায়গার উপর প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা খরচ করে গড়ে উঠেছে জগন্নাথধাম। এখানেই ওই গরিব পরিবারগুলি থাকত। জীবন–জীবিকাও ওখানেই চলত। আজ এই ১৯টি পরিবার ভিটেহারা। আশ্রয়হীন। তাই তো ওখানের হাসপাতালের পাঁচিলের গায়ে পলিথিন লাগিয়ে বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন: ‘কোনও দেশের পতাকা পোড়ানো উচিত নয়’, নাম না করে শুভেন্দুকে বার্তা দিলীপের
ওই এলাকা থেকে প্রায় ৭০টি ঝুপড়ি দোকান উচ্ছেদ করা হয় বলে অভিযোগ। এখনও মেলেনি পুনর্বাসন। গৃহহীন হয়ে রয়েছেন—বরুণ জানা, গণেশ জানা, নিতাই পাত্র, পূর্ণিমা জানা, বাপি শ্যামল, সুমিতা পাত্ররা। হাসপাতালে পাঁচিলের এক ফাঁকে ছেঁড়া পলিথিন, বাঁশ এবং টিনেঘেরা ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। উচ্ছেদ হয়ে এখানে আসা বাপি শ্যামল জানান, এখনও হুমকি মেলে এখান থেকে উঠে যাওয়ার। আর সুমিতা পাত্রের বক্তব্য, ‘মন্দির হয়েছে সেটা ভালো কথা। অনেক দর্শনার্থী আসলে পর্যটনের উন্নতি হবে। কিন্তু দিদির উপর অনেক ভরসা। তাই জানতে চাই, আমাদের কী হবে? আমাদের জীবিকার ব্যবস্থা করলে ভালো হতো।’