পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতোই কুমারটুলি ঘাটে ট্রলিব্যাগবন্দি দেহ উদ্ধারের ঘটনায় এক-একটা করে রহস্যের পরত ছাড়াচ্ছেন তদন্তকারী। আর, সেই পরত যতই খুলছে, সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য!সংবাদ প্রতিদিন -এর অনলাইন পোর্টালে এই ঘটনা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা থেকেই স্পষ্ট তদন্তকারীদের কাছে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছেন একটি বিশেষ চরিত্র। তিনি আর কেউ নন। সেই ব্যক্তি হলেন - নিহত সুমিতা ঘোষের প্রাক্তন স্বামী সুদীপ্ত ঘোষ।হ্যাঁ। সেই সুদীপ্ত ঘোষ, যে প্রৌঢ় এর আগে দাবি করেছিলেন, প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে নাকি বহু বছর কোনও যোগাযোগই ছিল না তাঁর। আর, এখন শোনা যাচ্ছে, মৃত্যুর কিছু দিন আগেই সুদীপ্তর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সুমিতা! তাও আবার পরবর্তীতে তাঁর খুনি - ফাল্গুনী ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে!পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরার মুখে এই তথ্য সামনে এনেছেন, সুমিতা হত্যাকাণ্ডে ফাল্গুনীর 'পার্টনার ইন ক্রাইম', তাঁর মা - আরতি ঘোষ। এবং ফাল্গুনী নিজেও নাকি একই কথা জানিয়েছেন! শুধু তাই নয়, তাঁরা আরও দাবি করেছেন, যেদিন সুমিতা বর্ধমানে তাঁর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেদিন তাঁদের সঙ্গে আরও এক ব্যক্তি ছিলেন!কিন্তু, কে সেই অপর রহস্যময় চরিত্র? আপাতত এই প্রশ্নের কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। জানা যায়নি, কেন হঠাৎ করে এত বছর পর সুমিতা তাঁর প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেন।সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই ঘটনা সামনে আসার পরই সুদীপ্ত ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এবং তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর নাকি সুমিতার সঙ্গে রাস্তায় দেখা হয়েছিল ও তাঁরা কেবলমাত্র পরস্পরের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেছিলেন! সত্যিই কি তেমনটাই ঘটেছিল? শুধুমাত্র প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে অত দূর গিয়েছিলেন সুমিতা? নাকি এই তথ্যেও জল মেশানো রয়েছে? নাকি, আসলে অন্য কোনও কারণে প্রাক্তন শ্বশুবাড়ির গ্রামে গিয়েছিলেন সুমিতা এবং ঘটনাচক্রে প্রাক্তন স্বামীর সামনা-সামনি পড়ে গিয়েছিলেন?কিন্তু, তাই যদি হবে, তাহলে এর আগে কেন সুদীপ্ত ঘোষ জানিয়েছিলেন, আইনত বিচ্ছেদের পর আর স্ত্রীর সঙ্গে কখনও কোনও যোগাযোগ হয়নি তাঁর? তিনি কেন তখন সুমিতার সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক 'সাক্ষাৎ ও সৌজন্য বিনিময়'-এর প্রসঙ্গ তোলেননি? এই সমস্ত প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁরা খুঁজছেন উত্তর।প্রসঙ্গত, বর্ধমানের নাদনঘাটের বাসিন্দা সুদীপ্ত ঘোষের সঙ্গে প্রয়াত সুমিতা ঘোষের বিয়ে হয়েছিল ২০০৪ সালে। সেই সম্পর্ক প্রথম দিকে মধুর হলেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে সুমিতার ঝামেলা লেগেই থাকত। শেষমেশ ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ সুমিতা ও সুদীপ্তর আইনত বিচ্ছেদ হয়ে যায়।এর আগে সুদীপ্ত দাবি করেছিলেন, সেই ঘটনার পর তাঁদের দু'জনের চলার পথ চিরকালের মতো আলাদা হয়ে যায়। এবং টিভি-তে খবর শুনে তিনি সুমিতার দেহ উদ্ধার ও পরবর্তীতে তাঁর খুনের বিষয়টি জানতে পারেন। দাবি করেন, যোগাযোগ না থাকলেও প্রাক্তন স্ত্রীর এমন পরিণতি দেখে তিনি মর্মাহত।