কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলনে যখন উত্তাল দেশের একটা অংশ তখন ফের CAA-র বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে বিঁধে বললেন, CAA-র নামে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বিজেপি। সঙ্গে দলের মঞ্চ থেকে এদিন ‘মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে’ রাজ্যের সমস্ত উদ্বাস্তুকে নাগরিক ঘোষণা করে দিলেন তিনি।
এদিন মমতা ভাষণের শুরু থেকেই CAA-র বিরুদ্ধে বলে মতুয়া মন জয়ের চেষ্টা করেন। বলেন, ‘ওপার থেকে অনেক মানুষ ছিন্নমূল হয়ে এসেছেন। আমরা তাঁদের সাদরে গ্রহণ করেছি। মনে রাখবেন এটা শুধু আমাদের বাড়ি নয়, এটা আপনাদেরও বাড়ি। নতুন করে এজন্য সার্টিফিকেটের দরকার নেই। আপনারা প্রত্যেকে নাগরিক। আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে ক্যা-ক্যা বলে, কা কা বলে’।
CAA নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে মমতার দাবি, ‘এই যদি একবার চালু করে, বলবে ঠাকুমার বয়স দাও। ঠাকুরদাদার জন্মতারিখ দাও। দিতে পারবেন তো? রাজ্য সরকার আপনাদের অধিকার দিয়েছে। আপনারা সবাই নাগরিক। আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি মতুয়ারা সবাই এদেশের নাগরিক। নতুন করে আর নতুন সার্টিফিকেটের কারও দরকার নেই’।
মমতার দাবি ইতিমধ্যে ভারতের নাগরিকের স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুরা। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে রাজ্য সরকারের জমিতে থাকা সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ও বেসরকারি জমিতে থাকা উদ্বাস্তু কলোনিকেও উদ্বাস্তু হিসাবে ঘোষণা করে। উদ্বাস্তুদের এদেশের নাগরিক করে দিয়েছি। আজকে কেউ উদ্বাস্তু কলোনি থেকে কাউকে জোর করে তাড়াতে পারবে না। আপনার ছেলে আছে, আপনার মেয়ে আছে। আপনার ছেলে – মেয়ে স্কুলে পড়াশুনো করে। কেউ কোথায় কাজে যায়। ওইটাই প্রমাণ হয়ে গেল’।
তৃণমূলনেত্রীর দাবি, রাজ্যে কে থাকবে তা ঠিক করে রাজ্য সরকার। মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন, রাজ্য সরকার মেইন ক্ষমতায় অধিকারী। কেন্দ্রীয় সরকার নয়। রাজ্যে কে থাকবে সেটা রাজ্য সরকার ঠিক করে। তাই কোনও NRC করতে দেবো না, NPR করতে দেবো না। ক্যা – কা বলে মিথ্যে কথা বলে লাভ নেই। আমরা সবাই নাগরিক, এটা মাথায় রাখতে হবে’।
উপস্থিত জনতাকে মমতার প্রশ্ন, ‘আপনাদের কী বলবো, আমায় যদি বলে তোমার মায়ের জন্মদিন বলো, আমি বলতে পারবো? তোমার মায়ের জন্মতারিখ বলো, আমি বলতে পারবো? তাহলে আপনারা কোত্থেকে বলবেন’?
এদিনও ফের বাংলাকে গুজরাত করতে দেব না বলে গর্জন ছাড়েন মমতা। বলেন, ‘বিজেপির কাজই হচ্ছে বাংলা থেকে বাংলার লোকেদের তাড়িয়ে দেও। আর তাড়িয়ে দিয়ে বাংলাকে গুজরাত বানিয়ে দেও। আমরা বলি হবে না, হবে না, হবে না’।