মাছে–ভাতে বাঙালি বলে একটা প্রবাদ আছে। ইদানিং মাছের দাম বাজারে যথেষ্ট বেড়েছে। তাতে বাঙালির পকেটে বেশ চাপ পড়েছে। এবার কেন্দ্রীয় মৎস্য বাজার গড়ে উঠছে নদিয়া জেলায়। তখন ইলিশ, চিংড়ি, রুই–কাতলা, ট্যাংরা সব মাছই মিলবে নবদ্বীপ শহরের কেন্দ্রীয় বাজারে। এমনকী খুচরো ব্যবসার সঙ্গে পাইকারি মাছ বিক্রিও হবে এই একই বাজারে। নবদ্বীপ পুরসভার উদ্যোগে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল ফিশ মার্কেট গড়ে উঠতে চলেছে। ভাগীরথী নদীর তীরে দণ্ডপাণিতলায় এই বাজার গড়ে উঠতে চলেছে।
এই কেন্দ্রীয় মাছ বাজার গড়ে তুলতে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ১৪৫৭.১৪ বর্গমিটার জমিতে তা গড়ে উঠছে। এখানে আধুনিক প্রযুক্তিতে সেন্ট্রাল ফ্রিজারের মাধ্যমে মাছ সংরক্ষণ করা হবে। ৬ মাস আগে থেকেই এই মাছ বাজার তৈরি হচ্ছিল। এখন তা শেষ পর্যায়ে। দ্রুত এই বাজার উদ্বোধনের পরিকল্পনা আছে। নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা এই বিষয়ে বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের নানা সাহায্য করবে এই বাজার। পাইকারি এবং খুচরো—দু’ভাবেই মাছ বিক্রি হবে। নবদ্বীপের মানুষেরও উপকার হবে।’
আরও পড়ুন: এবার থেকে নির্মাণের অনুমতি দেবে বিশেষ কমিটি, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বদল আনল রাজ্য সরকার
এখানে একদিকে নদী মিলবে। অপরদিকে ব্যবসা মিলবে। এই দুইয়ের মিশেল ঘটছে বলেই কেন্দ্রীয় মৎস্য বাজার সাফল্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সুতরাং মাছ ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করতে পারবেন। আবার মানুষ সস্তায় মাছ পাবেন। এই কেন্দ্রীয় মৎস্য বাজারে তিনটি ব্লক আছে। প্রথম ব্লকে মাছ বিক্রেতাদের জন্য ৪০টি দোকান তৈরি করা হচ্ছে। দ্বিতীয় ব্লকে থাকছে কোল্ড স্টোরেজ, সাইকেল গ্যারেজ, ক্যান্টিন, বিদ্যুতের পাওয়ার রুম, মৎস্যজীবীদের জন্য কমিউনিটি হল। তৃতীয় ব্লকে পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক শৌচাগার সহ অন্যান্য পরিকাঠামো রাখা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে খবর, আগে ভাগীরথী নদী থেকে ট্যাংরা, কই–সহ নানারকম মাছ মিলত। এখন এখানে একাধিক বাজার হয়েছে। ফলে কোথায় কোন মাছ কোনদিন মিলবে তা স্পষ্ট নয়। কেন্দ্রীয় মৎস্য বাজারে এলে সবই একছাতার তলায় মিলবে। ভাগীরথী নদীর মৎস্যজীবীদের বক্তব্য, ‘নদীতে রোজ মাছ পাই। কিন্তু সেই মাছ পাড়ায় বিক্রি করে ভাল দাম মেলে না। এই বাজারে সেটা মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই বাজারটি চালু হলে ক্ষুদ্র মাছ ব্যবসায়ীদের খুব উপকার হবে।’