হাওড়া পুরসভার নির্বাচন কি শীঘ্রই? এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে হাওড়াবাসীর মধ্যে। কারণ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কদিন আগে ‘হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল ২০২১’ বিলে সই করেছেন। তার পর থেকেই গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল। তবে বিলে সই করা হলেও একটা জট থেকেই গিয়েছে। আর সেই ‘জটিলতা’ হচ্ছে অতিরিক্ত ১৬টি ওয়ার্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাই এটাকে ‘১৬–র জট’ বলা হয়। আর এই জটিলতা না কাটলে হাওড়া পুরসভার নির্বাচন বিশ বাঁও জলে বলে মনে করা হচ্ছে। যা এখন চিন্তার।
প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ‘হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (সংশোধনী) বিল ২০২১’ বিলে সই করেননি। সেটি রাজভবনে পড়েছিল। এই বিল বিধানসভায় পাশ করিয়ে রাজভবনে পাঠানো হয়েছিল। তখন হাওড়া পুরসভার ওয়ার্ড সংখ্যা ছিল ৫০। ২০২২ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশন হাওড়া পুরসভা এলাকায় আসনসংখ্যার পুনর্বিন্যাস করে। তখন ৫০টি ওয়ার্ড বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬টি। ওই বিলে (আগের) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সই করেছেন। সেখানে ৫০টি ওয়ার্ডের হাওড়া পুরসভাই আছে। পরবর্তী বর্ধিত ওয়ার্ডের সংখ্যা বিলে নেই। তাহলে নতুন ১৬টি ওয়ার্ডে কী হবে? উঠছে প্রশ্ন। আর জটিলতা এখানেই।
আরও পড়ুন: ‘দেশে জঙ্গি ঢুকিয়ে দিয়ে যুদ্ধের নাটক করছে বিজেপি’, কেন্দ্রকে এবার তুলোধনা আজাদের
এখন হাওড়া পুরসভার নির্বাচন হলে এই ১৬টি ওয়ার্ডের কী হবে? এটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে হাওড়ার পুরপ্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন এটা নিয়ে যে পদক্ষেপ করবে, সেটাতেই আমাদের এগোতে হবে।’ এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী ৫ মে মুর্শিদাবাদ সফরে যাবেন। সেখান থেকে ফিরে এই নিয়ে বৈঠক করতে পারেন নবান্নে বলে সূত্রের খবর। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের খেয়ালি মনোভাবের জন্যই হাওড়া পুরসভার পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে শেষবার হাওড়া পুরসভায় ভোট হয়েছিল। সেটার মেয়াদ শেষ হতেই তা চালাচ্ছে পুরপ্রশাসক। সেটাও অনেকদিন হয়ে গেল। আগে হাওড়া পুরসভার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল বালি পুরসভাকে। আবার ২০২১ সালে বালিকে পৃথক করার বিল পাশ করা হয় বিধানসভায়। পুরনো বালি পুরসভার এলাকাকে ১৬টি ওয়ার্ডে ভেঙে হাওড়ার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। তখনও হাওড়ার ওয়ার্ড সংখ্যা দাঁড়ায় ৬৬। এরপর হাওড়া থেকে বালিকে বের করা হয়। আর হাওড়ার ৫০টি ওয়ার্ডকেই ভেঙে ৬৬টি ওয়ার্ড করা হয়। কিন্তু এই হাওড়া পুরসভার আসন পুনর্বিন্যাসের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও হয় দু’বছর আগে। তবে সেই মামলা খারিজ করে দেয় বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ। এখন দেখার কী হয়।