এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হেরেছেন বাংলায়। একজন সুভাষ সরকার। দ্বিতীয়জন নিশীথ প্রামাণিক। এই নিশীথ প্রামাণিককে হারাতেই জুটি হয়ে মাঠে নেমেছিলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং পোড়খাওয়া নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন নিশীথ প্রামাণিককে হারাতে না পারলে মাছ খাবেন না। যতদিন না হারাতে পেরেছিলেন ততদিন মাছ মুখে তোলেননি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তবে এবার মৎস্যমুখ করলেন তিনি। এই ঘটনা এখন রাজ্য রাজনীতিতে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে আসন সংখ্যা কমে বিজেপির দাঁড়িয়েছে ১২। ২০১৯ সালে হয়েছিল ১৮। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন বেড়ে হয়েছে ২৯। যা ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ছিল ২২। দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে হেভিওয়েট নেতা নেত্রীরা গোহারা হেরেছেন। আর উত্তরবঙ্গ বলতে কোচবিহার আসনটি ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। এই আসন জিততে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছে উদয়ন এবং রবীন্দ্রনাথকে। ঘাসফুলের দাপটে কোচবিহারে থাকা পদ্মবন লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। এখন যে কটি পঞ্চায়েত ছিল সেগুলিও তৃণমূলের হয়ে গিয়েছে। এখানে জয়ী হন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জগদীশ বর্মা বসুনিয়া। তাঁকে সংবর্ধনা দিয়ে মৎস্যমুখ করলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আর তাঁকে মাছ খাইয়ে দিলেন উদয়ন গুহ।
আরও পড়ুন: সিপিএম বহিষ্কার করতেই কাছে টানছে তৃণমূল কংগ্রেস, কে এই পঙ্কজ রায় সরকার?
কোচবিহারে এবার লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী করা হয় জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে। এবার উত্তরবঙ্গের জমিতে পদ্মফুলকে উপড়ে ঘাসফুল ফোটানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। নিশীথ প্রামাণিক কোচবিহারকে নিজের গড় বলতে শুরু করেছিলেন। যেটা এবার এক লহমায় মুছে দিলেন মানুষজন। এই কাজটির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বর্ষীয়ান নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরে দাঁড়িয়ে নিশীথ প্রামাণিককে হারানোর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। এমনকী যত দিন না পর্যন্ত নিশীথ হারছেন, ততদিন মাছ ছুঁয়ে দেখবেন না বলে শপথ নেন রবীন্দ্রনাথ। দীর্ঘ দেড়মাস মাছ থেকে নিজেকে দূরেই রেখেছিলেন তিনি।