সাম্প্রতিক সময়ে মুর্শিদাবাদ ও মালদা জেলায় গঙ্গাভাঙন একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিঘার পর বিঘা জমি তলিয়ে যাচ্ছে গঙ্গাবক্ষে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার মালদায় তিনি একটি প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন। সেখানে গঙ্গাভাঙন কীভাবে রোখা যায় তা নিয়ে প্রথমে সকলের কাছে পরামর্শ চান। এরপরে নিজেই গঙ্গাভাঙন রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা বলেন। এর পাশাপাশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এনিয়ে কোনও সহায়তা না করার অভিযোগ তোলেন। বর্ষার আগে গঙ্গার পার বাঁধাতে এবং নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জন্য রাজ্যের তরফে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে বলে তিনি জানান। মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়া জেলায় গঙ্গাভাঙন রুখেতে পঞ্চায়েত দফতর, সেচ দফতর এবং পরিবেশ দফতরকে যৌথভাবে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই গঙ্গার পাড় বাঁধাতে রাজ্য সরকার ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। সে কথা এদিন প্রশাসনিক বৈঠকে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছরে ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি। সব জলে যাচ্ছে।’ একই সঙ্গে কেন্দ্রের তরফ থেকে কোনও সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন। তবে এবার যাতে বাঁধ ভেঙে না যায় তার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়া, নদী গর্ভে বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আধিকারিকদের বলেন, ‘কেউ যাতে নদী থেকে পাঁচ কিলোমিটার মধ্যে বাড়ি করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক করুন।’ একই সঙ্গে নদীগর্ভে যাদের বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে তাদের সরকারের তরফে পাট্টা দিয়ে জমি দেওয়া এবং বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। পরিবেশ দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভাঙন প্রবণ এলাকায় ম্যানগ্রোভ জাতীয় চারা রোপনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বর্ষা আসতে দেরি নেই। তাই দ্রুত যাতে কাজ সম্পন্ন করা যায় তার জন্য তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করতে বলেছেন মমতা। যে সমস্ত ঠিকাদাররা ২০ বছর দায়িত্ব নিতে পারবেন তাদেরকে কাজ দেওয়ার পরামর্শ দেন।