দিল্লি, ওড়িশা, গুজরাটের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যে নাকি পশ্চিমবঙ্গবাসীদের বাংলাদেশি বলে হেনস্থা করা হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল কলকাতায় মিছিল করেন। আর সেদিনই উত্তরবঙ্গে হিলি সীমান্তের কাছ থেকে এক বাংলাদেশি দম্পতিকে ধরল বিএসএফ। জানা গিয়েছে, ধরা পড়া বাংলাদেশি দম্পতি ৩৫ বছর আগে হিলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল। তারা থাকত ছত্তিশগড়ে। ভারতের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, পাসপোর্ট সহ অন্যান্য নথি তৈরি করে ফেলেছিল তাদের মধ্যে একজন। পরে ছত্তিশগড়ে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত হয় তারা। এই আবহে হিলি দিয়েই ফের বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করে এই দম্পতি। সেখানেই বিএসএফের হাতে ধরা পড়ল তারা।
জানা গিয়েছে, ধৃতদের নাম শেখ ইমরান এবং জৈনাব ওরফে মাভিয়া আক্তার। মঙ্গলবার হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করছিল শেখ ইমরান, হিলির চক গোপাল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করে জৈনাব। সেই সময়ই বিএসএফ তাদের ধরে ফেলে। পরে ধৃতদের হিলি থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার ধৃতদের বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হয়। এই আবহে শেখ ইমরানকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং জৈনাবকে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠান বিচারক।
এদিকে শেখ ইমরান কোথা থেকে ভারতীয় নথি তৈরি করিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে হিলি থানার পুলিশ। প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে, ১৯৯০ সালে হিলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল শেখ ইমরান ও তার স্ত্রী। ছত্তিশগড়ের রায়পুরে শেখ ইমরান বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সায়েরি করত বলে জানা গিয়েছে। এদিকে ইমরানের সাত ভাই সহ বাকি গোটা পরিবারই থাকে বাংলাদেশে। তাদের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহীর বিরকুস্টায়।
এর আগে সম্প্রতি ৪৪৭ জন বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিককে ওড়িশা সরকার আটক করেছিল। তাঁদের মধ্যে থেকে অধিকাংশকেই ছেড়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশি ভেবে পশ্চিমবঙ্গের যে সব পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছিল তাদের। ছাড়া পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার। এদের আটক করেছিল ওড়িশার ঝাড়সুগুড়ার পুলিশ। তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার নাম করে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বেআইনিভাবে আটক করে বিজেপি শাসিত ওড়িশা সরকার। আটক শ্রমিকদের পরিবারগুলি দাবি করে যে তাদের কাছে আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ডের মতো সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি ছিল। এই আবহে বাংলার ক্ষমতাসীন দল আটক শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছিল। পরে নিজেদের 'ভুল' শুধরে নেয় ওড়িশা।