রানিগঞ্জে সোনার দোকানে ডাকাতি করা রুখে দিতে যে দুঃসাহস পুলিশকে দেখাতে হয়েছিল সেটা অনেকেরই মনে থাকার কথা। সাতজন ডাকাতের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে সেদিন লড়েছিলেন সাব–ইনস্পেক্টর মেঘনাদ মণ্ডল। ডাকাতদের সঙ্গে গুলির লড়াই করে কাত করে দিয়েছিলেন। মেঘনাদ মণ্ডল বিদ্যুতের খুঁটির আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রেখে সার্ভিস রিভলভার থেকে গুলি ছুঁড়ে জখম করেছিলেন। এবার আবার নিজের জীবনকে বাজি রেখে লড়াই করলেন ওসি মেঘনাদ। এখন তিনি ওসি পদে উন্নীত হয়েছেন। আর শুক্রবার রাতে তাঁকে দেখা গেল অন্ডালের উখড়ায়। একইরকম লড়াকু মেজাজে।
এখন অন্ডাল থানায় মেঘনাদ মণ্ডল ওসি হয়ে এসেছেন। আর এখানে এসেই একেবারে শাহেনশার মেজাজে রাতের অন্ধকারে তাঁকে দেখা গেল। গত শুক্রবার রাতে উখড়ায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে চিকিৎসা করাতে শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের ওই শিশুর। তখন চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়। তারপরই মারমুখী হয়ে ওঠেন মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা। সেই সুযোগে যোগ দেয় কিছু প্রতিবেশীও। এমন অবস্থায় ওই চিকিৎসক বেজায় বিপদে পড়ে যান। বারবার বোঝাবার চেষ্টা করেন চিকিৎসায় গাফিলতি হয়নি। বরং শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল।
আরও পড়ুন: ছ’জন অতিরিক্ত এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করছে কলকাতা পুরসভা, কিন্তু কেন?
কিন্তু কে শোনে কার কথা। মারমুখী লোকজনের জেরে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এই অবস্থার খবর পেয়ে অন্ডাল থানা থেকে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেঘনাদ মণ্ডল। দ্রুত সেখান থেকে চিকিৎসককে উদ্ধার করলেন তিনি। তবে পুলিশের উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ইট এসে লাগে মেঘনাদ মণ্ডলের মাথায়। তাঁর মাথায় থেকে ঝরতে থাকে রক্ত। তড়িঘড়ি ব্যান্ডেজ জোগাড় করে তাঁর মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়। ওই ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে কড়া হাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে চিকিৎসককে থানায় নিয়ে আসেন ওসি।