সাতসকালে নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হল সদ্যোজাতের দেহ। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, সদ্যোজাত শিশুটি কন্যা সন্তান। শনিবার (২৯ মার্চ, ২০২৫) সকালে এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট এলাকায়।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সতীঘাট বাস স্টপেজের কাছেই একটি বড় নর্দমা রয়েছে। পথচলতি মানুষের হঠাৎ সেদিকে নজর যায়। তাঁরা দেখেন, সেখানে একটি শিশুর দেহ পড়ে রয়েছে! সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। দেহটির ময়নাতদন্ত করানো হবে। তবে, সেটি যে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের দেহ প্রাথমিকভাবে দেখে সেটা বোঝা গিয়েছে বলে দাবি সূত্রের।
কিন্তু, দেহটি ওখানে কীভাবে এল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, খুব সম্ভবত রাতে বা ভোরের দিকে কেউ বা কারা দেহটি ওখানে ফেলে রেখে গিয়েছে। আবার কারও মতে, দেহটি নর্দমার জলে ভেসেও ওই জায়গায় আসতে পারে। তারপর হয়তো সেটি কোনওভাবে সেখানেই আটকে গিয়েছে।
প্রশ্ন আরও রয়েছে, অনেকেই মনে করছেন, হয়তো কন্যাসন্তান বলেই শিশুটিকে ফেলে যাওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে খুনের আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। কেউ কেউ আবার অবৈধ গর্ভপাতচক্রের উপস্থিতিও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা সমস্ত সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখবে। তবে, আগে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসা দরকার। তা না হলে শিশুটি কীভাবে, কখন মারা গিয়েছে, সেটা স্পষ্ট হবে না। এছাড়া, দেহটি ওই জায়গায় কীভাবে পৌঁছল, তা জানতে এলাকার ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, এই বাঁকুড়াতেই গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নর্দমায় ভ্রূণ ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনাটি ঘটেছিল বাঁকুড়ার সোনামুখী থানা এলাকায়। সেই ঘটনায় একজন হাতুড়েকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, এক রবিবারের সকালে তাঁরা যখন পাড়ার চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন, সেই সময়েই এক মহিলা বালতিতে ভরে কিছু একটা নিয়ে আসেন এবং সেটি রাস্তার পাশে নর্দমায় ফেলে দিয়ে যান।
ওই মহিলা স্থানীয় একটি পলিক্লিনিকে কাজ করতেন বলে দাবি করা হয়। তিনি চলে যেতেই এলাকাবাসী নর্দমায় উঁকি মেরে দেখেন। দেখা যায়, সেখানে পড়ে রয়েছে মানব ভ্রূণ! সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল, সংশ্লিষ্ট ওই পলিক্লিনিকে বেআইনিভাবে গর্ভপাত করানো হয়।
সেই ঘটনার পর ছ'মাস কাটতে না কাটতেই আবারও সেই বাঁকুড়াতেই নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হল সদ্যোজাতের দেহ।