কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে আগেই জাতীয় পরিবেশ আদালতে ধাক্কা খেতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে। তারপরেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে তৎপর হয়েছে রাজ্য। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিটি পুরসভা এলাকার কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সবমিলিয়ে রাজ্যজুড়ে ৬৮টি ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। সূত্রের খবর, আগামী এক বছরের মধ্যে এই কেন্দ্রগুলি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঝকঝকে হবে পুর এলাকা, এবার আবর্জনা সাফাই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে এই কেন্দ্রগুলি গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট এজেন্সি (সুডা)- কে। সূত্রের খবর, রাজ্যে প্রতিদিন ৯ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হয়। এই কেন্দ্রগুলি তৈরি হলে দিনের দিনই এই সমস্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধীনে আনা যাবে। উল্লেখ্য, দিনের পর দিন বর্জ্য জমে থাকলে তা কতটা বিপদ ডেকে আনতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে বেলগাছিয়া ভাগাড়। সেখানে জমে থাকা বর্জ্যে প্রচুর পরিমাণে মিথেন গ্যাস তৈরি হওয়ায় এবং বর্জ্যের চাপ মাটির সহন ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় একের পর এক ধস নেমে বিপর্যয় দেখা গিয়েছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা হলে সেই সমস্যা আর দেখা দেবে না বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহলের আধিকারিকরা।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যজুড়ে ক্লাস্টার এবং এককভাবে ৬৮টি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এগুলি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, এই ৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ইতিমধ্যে পাঁচটি ইউনিট চালু হয়েছে। সেগুলিতে ক্লাস্টার আকারে একাধিক পুরসভার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব হচ্ছে। উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের ১৭টি পুরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে এই ইউনিটগুলিতে।
এছাড়াও, একাধিক পুরসভা এলাকায় নতুন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য জমি পাওয়া গিয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে। এই পুরসভাগুলির মধ্যে রয়েছে- বিষ্ণুপুর, ধুপগুড়ি, মাল, মেমারি, বাঁশবেড়িয়া, আসানসোল, আরামবাগ, ফালাকাটা, শিলিগুড়ি। এছাড়াও রয়েছে- চন্দননগর, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর, ডালখোলা, কান্দি, পুরনো মালদা পুরসভা প্রভৃতি পুরসভা। ইতিমধ্যেই এই কাজের জন্য এই সব পুরসভাগুলি এলাকাগুলিতে সব মিলিয়ে প্রায় ৬১ একর জমি হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই সেচ, ভূমি সংস্কার, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্ত দফতর জমি হস্তান্তর করেছে। তারপরেই বেশ কিছু জায়গায় কাজ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, হালিশহর, বজবজ, খড়গপুর সহ আরও বেশ কিছু পুরসভা এলাকায় জমি এখনও চিহ্নিত হয়নি। দ্রুত তার নির্দেশ দিয়েছে দফতর।