বর্তমান কর্মব্যস্ততার যুগে পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে উভয়কেই উপার্জনের জন্য বাইরে বেরোতে হয়। এক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষের কাছে গণপরিবহনই প্রধান ভরসা। কিন্তু সম্প্রতি এক সমীক্ষায় সামনে এসেছে এক ভয়ানক তথ্য। দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে বিগত ছয় মাসে গণপরিবহনে ৪৬.৫ শতাংশ মহিলা যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন।সামাজিক সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় বলা হয়েছে, যৌন হেনস্থার শিকার নারীদের ৭৫ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা বেশির ভাগ সময়ে তাঁদের সহযাত্রীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। আর ২০ দশমিক ৪ শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁদেরকে হেনস্থা করেছে চালকের সহকারীরা।সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হেনস্থাকারীদের অধিকাংশই মধ্যবয়সী পুরুষ। সমীক্ষকদের মতে, গণপরিবহনে আসনের অতিরিক্ত লোক নেওয়ার ফলে এই ধরনের ঘটনা বাড়ছে। প্রায় ৬৩.৪ শতাংশ তরুণী যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ‘ঢাকা শহরে গণপরিবহনে হয়রানি: কিশোরী এবং তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব’ শিরোনামে শুক্রবার অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করে সমীক্ষার ফল তুল ধরে সংগঠনটি।বেশির ভাগ আক্রান্ত মহিলা জানিয়েছেন, ওই পরিবহনের কেউ তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। তবে ৪৩ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা সহযাত্রীদের সহায়তা পেয়েছেন। আবার বিস্ময়কর ব্যাপার সাহায্য পাওয়ার জন্য হেল্পলাইন ৯৯৯-এর সাহায্য নিয়েছেন মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ।মহিলাদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যার জন্য দায়ী কারণগুলো অনুসন্ধান করতে এর আগে সারা দেশে সমীক্ষা চালিয়েছিল আঁচল ফাউন্ডেশন। সেই সমীক্ষায় দেশে ৪৫ দশমিক ২৭ শতাংশ নারী গণপরিবহনে যৌন হয়রানির কারণে মানসিক সমস্যায় ভুগছেন বলে দাবি করা হয়।সেই সমীক্ষার এই পর্যায়ে সংগঠনের তরফে এবার কেবলমাত্র ঢাকার তরুণীদের নিয়ে সমীক্ষা করা হয় জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তাঁদের গবেষণায় ঢাকার প্রধান গণপরিবহনগুলোর মধ্যে বাস, ট্রেন, রাইড শেয়ারিং ইত্যাদিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অনলাইন এবং অফলাইন উভয় পদ্ধতির সমন্বয়ের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।