হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমে ২০০ কোটি টাকার কর ফাঁকির পর্দা ফাঁস হয়েছে। সংসদে এমনটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লোকসভায় ২০২৫ সালের নতুন অর্থ বিল নিয়ে আলোচনায় অর্থমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, এই বিলের মূল লক্ষ্য হল ডিজিটাল যুগে কর ফাঁকি এবং আর্থিক প্রতারণা আটকানো। সীতারামন আরও বলেন, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এবং গুগল ম্যাপসের ইতিহাসের মতো ডিজিটাল রেকর্ডগুলির মাধ্যমে কীভাবে কর ফাঁকি এবং গোপন নগদ অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে, তার কিছু উদাহরণও তুলে ধরেছেন তিনি। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কাছে বড় আর্জি মায়ানমারের হিন্দুদের, শুনবেন কি ইউনুস?)
নির্মলা সীতারামন বলেন, 'মোবাইল ফোনের এনক্রিপ্টেড মেসেজের মাধ্যমে হিসাব বহির্ভূত ২৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ক্রিপ্টো অ্যাসেটের সম্পর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের মাধ্যমেই হিসাব বহির্ভূত ২০০ কোটি টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।' তিনি আরও জানান, গুগল ম্যাপসের ইতিহাস ব্যবহার করে কিছু গোপন নগদ সঞ্চয়ের জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকেও কিছু ‘বেনামী’ সম্পত্তি হদিশ পাওয়া গেছে।সীতারামন বলেন, 'নতুন বিল অনুযায়ী কর কর্মকর্তাদের ইমেইল, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম-সহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করার অধিকার দেওয়া হবে। এছাড়াও, ব্যবসার সফটওয়্যার এবং সার্ভারের উপর নজরদারি করা হবে, যা আর্থিক লেনদেন লুকানোর কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।' এর ফলে, ট্যাক্স কর্তৃপক্ষকে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ এবং ম্যানেজমেন্ট করার সুযোগ দেওয়া হবে, যাতে ভার্চুয়াল সম্পত্তি যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সি উপেক্ষিত না হয়। (আরও পড়ুন: অসুস্থ চিন্ময় প্রভু, 'হিন্দুদের শিক্ষা দিতে চাইছে?' প্রশ্ন কার্তিক মহারাজের)
আরও পড়ুন: 'সব সদস্য প্রস্তুত', অভ্যুত্থান জল্পনার মাঝে বাংলাদেশি সেনা প্রধানের বড় বার্তা
২০২৫ সালের আয়কর বিলটি ১৩ ফেব্রুয়ারি লোকসভায় উত্থাপন হয়। এটি ১৯৬১ সালের পুরনো আয়কর আইনকে প্রতিস্থাপন করার উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই নতুন বিলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক কর ব্যবস্থা সহজ এবং আধুনিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে আর্থিক এবং সামাজিক বাস্তবতার পরিবর্তনগুলির সাথে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
আরও পড়ুন: চিন সফরের আগে মহম্মদ ইউনুসকে বার্তা পাঠালেন নরেন্দ্র মোদী, লিখলেন...
সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, নতুন আয়কর বিলে আয়কর দফতরকে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ব্যক্তিগত ইমেল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, অনলাইন বিনিয়োগ অ্যাকাউন্ট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্টে প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন আয়কর বিলটি ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। কর ফাঁকি বা গোপন আয়, সম্পদ বা মূল্যবান সামগ্রী লুকিয়ে রাখা হয়েছে এমন সন্দেহ হলে এই অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে আয়কর দফতর।আগে শুধু দরজা, সিন্দুক বা লকার খুলে তল্লাশি করা যেত, তবে ২০২৬ সালের নতুন বিল অনুযায়ী, এই অধিকার ডিজিটাল ক্ষেত্রেও প্রসারিত হবে। এখন আয়কর আধিকারিকরা কম্পিউটার সিস্টেম এবং অনলাইন অ্যাকাউন্টেও প্রবেশাধিকার পাবে, যদি তাদের সন্দেহ হয় যে সেখানে কর ফাঁকির তথ্য লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ১৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে প্রস্তাবিত নতুন বিলটি পেশ করেন।