উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে এক মহিলাকে গণধর্ষণ করে যৌনাঙ্গে বোতল ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল গাজিয়াবাদে। পরে তদন্তে পুলিশ জানতে পারে মহিলার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এরপরেই মিথ্যা অভিযোগ করার জন্য মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই মহিলা তাঁর স্বামীর বন্ধুদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ এবং অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। (আরও পড়ুন: অ্যাশলের পাশাপাশি শিভন! আরও একবার বাবা হলেন ইলন? কটা সন্তান মাস্কের?)
আরও পড়ুন: চিন্ময় প্রভুর নামে এবার শিশু ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ বাংলাদেশে, ভাইরাল ‘ভিডিয়ো’
গাজিয়াবাদের ডিসিপি রাজেশ কুমার সিং জানিয়েছেন, মহিলা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গণধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন। তদন্ত ও ডাক্তারি পরীক্ষার পর দেখা যায়, মহিলা তাঁর স্বামীর বন্ধুদের বিরুদ্ধে যে গণধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন তা মিথ্যে এবং সাজানো। পরে মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। (আরও পড়ুন: 'খারাপ লাগছে', রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ না পাওয়ায় 'ক্ষুব্ধ' আরজি কর নির্যাততিতার বাবা)
কী অভিযোগ ছিল মহিলার?
অভিযোগ অনুযায়ী, মহিলা দাবি করেন, যে গত সোমবার তিনি বাজারে যাওয়ার সময় তাঁর স্বামীর তিন বন্ধু তাঁকে অপহরণ করে। এরপর তাঁকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বেহুঁশ করে তিনজন মিলে গণধর্ষণ করে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, যে অভিযুক্তরা তাঁর ঘাড়ে কিছু রাসায়নিক পদার্থ ঢেলে দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগে মহিলা দাবি করেছিলেন, যে গণধর্ষণের পর অভিযুক্তরা তাঁর গোপনাঙ্গে একটি বোতল ঢুকিয়ে দেয়। পরে তাঁকে অচেতন অবস্থায় মেহেরৌলি গেটের কাছে একটি আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেয়। (আরও পড়ুন: ট্যাংরার রেশ কাটতে না কাটতেই পর্ণশ্রী! উদ্ধার ২২ বছরের মেয়ে ও বাবার মৃতদেহ)
আরও পড়ুন: নাহিদদের দলের আত্মপ্রকাশের মঞ্চের স্ক্রিনে হঠাৎ ফুটে উঠল হাসিনার ছবি, তারপর…
এরপরের দিন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মহিলা। ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা জানতে পারে, মহিলা রাত সাড়ে ৮ টার দিকে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। পরে একটি গাড়িতে উঠেছিলেন এবং রাত ১০ঃ১৯ টা নাগাদ তাঁকে বাড়িতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি তারপর স্বাভাবিকভাবেই হেঁটে নিজের ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। এদিকে, অভিযুক্তদের কল রেকর্ড এবং অবস্থান খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে তারা ঘটনাস্থলে ছিল না। পরে ডাক্তারি পরীক্ষার সময় জানা যায়, মহিলা ঘাড়ে যে রাসায়নিক লাগানো হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন আসলে তা লাগানো হয়েছিল তুলোর মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, এর আগে ওই মহিলা তাঁর স্বামী বিকাশ ত্যাগী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধেও থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। গত বছরের জুন মাসে বিকাশের সঙ্গে লিভ ইন সম্পর্কে থাকার সময় তিনি দাবি করেছিলেন, যে গাজিয়াবাদের কবিনগরের বাসিন্দা বিকাশ ত্যাগী তাঁকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তিনি বিকাশের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করেছিলেন, যে বিকাশ তাঁকে মারধর করতেন এবং পেটে লাথি মারার ফলে গর্ভপাত হয়ে যায়। পরে মহিলা বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁর বক্তব্য পরিবর্তন করেন। তিনি জানিয়েছিলেন, পারস্পরিক সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসরণ না করার কারণে তাঁর গর্ভপাত হয়েছিল।
পরে অগস্ট মাসে মহিলা পুলিশকে আবার জানান, যে তিনি স্বামী, তাঁর দেওর এবং এক বন্ধুর হুমকির মুখে বিবৃতি পরিবর্তন করেছিলেন। যদিও সেই সময় তিনি মামলা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছিলেন এবং দাবি করেছিলে যে তিনি বিকাশকে বিয়ে করেছেন। পরে জানুয়ারিতে তিনি বিকাশের বিরুদ্ধে অসম্পূর্ণ বিবাহ, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং তাঁকে পুড়িয়ে মেরে ফেলার চেষ্টার অভিযোগে একটি এফআইআর দায়ের করেন। পরে তিনি অভিযোগ করেন, যে বিকাশ এবং তাঁর দুই বন্ধু তাঁকে গণধর্ষণ করেছেন। যদিও গণধর্ষণের দাবি মিথ্যা ছিল। তবে তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষায় পুড়ে যাওয়া আঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং বিকাশকে ১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্পর্ক শুরু হওয়ার পর থেকেই মহিলা বিকাশের ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। ফলে ফ্ল্যাট হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি মিথ্যে অভিযোগ করতে পারেন।