ডোনাল্ড ট্রাম্পের বদলে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন ইলন মাস্ক। সেই ভান্সই এবার মাস্ককে সতর্ক করে বললেন, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে 'কঠোর ও উস্কানিমূলক' পোস্ট লিখে ইলন মাস্ক 'বড় ভুল' করছেন। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এবং 'বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তির' মধ্যে প্রকাশ্য বিরোধের পরে শুক্রবার প্রকাশিত একটি সাক্ষাৎকারে ভাইস প্রেসিডেন্ট শাসালেন মাস্ককে। ‘ভারতের জামাই’ ভান্স যে ট্রাম্পের প্রতি অনুগত, তার প্রমাণও দিলেন। উল্লেখ্য, ভান্সের স্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত বলে ভারতীয় মিডিয়ায় অনেক সময়ই তাঁকে ‘ভারতের জামাই’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়ে থাকে। (আরও পড়ুন: খলিস্তানি মোহ কাটিয়ে ভারতের 'দাম' বুঝল কানাডা, মোদীকে নিয়ে একই পাতায় শাসক-বিরোধী)
আরও পড়ুন: মেইতেই নেতাদের গ্রেফতারির খবরে আগুন জ্বলল মণিপুরে, ৫ জেলায় বন্ধ হল ইন্টারনেট
মাস্ককে হতাশ হয়ে পড়া একজন আবেগপ্রবণ ব্যক্তিত্ব হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন ভান্স। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আমি আশা করি ইলন অবশেষে ফিরে আসবে। তিনি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন বলে এখন তা সম্ভব নাও হতে পারে। কয়েক মাস আগে তিনি ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছেন তাঁরা (মাস্ক ও ট্রাম্প)। তাঁদের সম্পর্ক ঠিক হয়ে যাবে বলে আশা করি।' ট্রাম্পকে আক্রমণ করে মাস্কের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নিয়ে ভান্স বলেন, 'ইলন খামখেয়ালি'। (আরও পড়ুন: ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম না হলে ছাত্রীর বাড়িতে বোমা মারার হুমকি 'বন্ধুর')
আরও পড়ুন: শুভাংশুদের মহাকাশে নিয়ে যেতে প্রস্তুত মাস্কের ড্রাগন, কবে কখন হবে এই মিশন?
উল্লেখ্য, টেসলা, স্টারলিঙ্ক, স্পেসএক্সের মালিক ইলন মাস্কের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। একসময় এই ইলন মাস্ককেই সরকারে ব্যয় কমাতে ডিওজিই-র মাথায় বসিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে সেই ট্রাম্পের ব্যয় বিলের সমালোচনা করেছেন ধনকুবের। মাস্ক আরও পরামর্শ দিয়েছিলেন যে ট্রাম্পকে অভিশংসিত (ইমপিচ) করা উচিত এবং জেডি ভান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার সামলানো উচিত। তবে সেই ভান্সও জনসমক্ষে মাস্ককে তোপ দেগেছেন।
২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনের পরপরই ট্রাম্পের সঙ্গে মাস্কের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। তবে সেই সময় সেই চর্চা ছিল ইতিবাচক। মাস্ককে ডিইওজিই-র প্রধান করেন ট্রাম্প। তবে কয়েক মাস যেতে না যেতেই তাঁদের বন্ধুত্বে চিড় ধরেছে। ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর আইন নিয়ে দুজনের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে থেকেই মাস্ক 'বিগ বিউটিফুল বিল অ্যাক্ট'-এর সমালোচনা করে আসছিলেন। তবে ট্রাম্প গত ৫ জুন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে সেদিন টেসলা ও স্পেসএক্সের জন্য সরকারি চুক্তি ও ভর্তুকি বাতিলের হুমকি দেন ট্রাম্প। এর পালটা ইলন মাস্ক দাবি করেছেন, তিনি না থাকলে ট্রাম্প নির্বাচনে জিততেন না। এছাড়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলেছেন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাস্ক বলেন, এই বিল আমেরিকাকে দেউলিয়া করে দেবে। তিনি এক্স-এ তাঁর লক্ষ লক্ষ অনুগামীদের এই বিলের বিরোধিতা করার আবেদন জানিয়েছেন এবং 'কিল দ্য বিলের' আওয়াজ তোলার আহ্বান জানান। এমনকী আমেরিকার বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নয়া রাজনৈতিক দল চালুরও ইঙ্গিত দিয়েছেন মাস্ক।