এবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের সঙ্গে গোলমাল বেঁধে গেল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের। আজ,বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় ডেরেক অভিযোগ করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে। আর তখনই ফুঁসে উঠে সঠিক তথ্য পরিবেশন করার জন্য সতর্ক করেন ধনখড়। এদিন ডেরেক অভিযোগ তোলেন, মহিলাদের সম্পর্কে অসাংবিধানিক মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তখনই সুর চড়িয়ে জগদীপ ধনখড় সঠিক তথ্য পেশ করার কথা বলেন ডেরেককে। এই তর্কাতর্কিতেই আজ শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যসভায়।
ইতিমধ্যেই সংসদে আনা মহিলা সংরক্ষণ বিল সমর্থন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেটাকে আজ তুলে ধরে ডেরেক জানান, তিনি সময় নষ্ট করতে চান না প্রাক্তন কুস্তিগীর ব্রিজ ভূষণের উপর আরোপিত যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করতে। আর তারপরই হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত যোগী আদিত্যনাথের সাক্ষাৎকার সামনে তুলে ধরে ডেরেক বলেন, ‘বিজেপি আদৌ মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে।’ আর ২০১০ সালের ১২ এপ্রিলের হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন পড়ে শোনান। সেখানে লেখা ছিল, ‘নয়াদিল্লির এসি রুমে যাঁরা থাকেন তাঁরা জন–নীতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় না। এই বিল (মহিলা সংরক্ষণ বিল) ভারতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ডুবিয়ে দেবে এটা যদি ঘটে। পুরুষদের মধ্যে যদি মহিলা সত্ত্বার উন্নতি ঘটে তাহলে তারা ভগবান হয়ে যায়। কিন্তু যদি মহিলাদের মধ্যে পুরুষ সত্ত্বার বিকাশ ঘটে তাহলে তারা দানব হয়ে যায়। পাশ্চাত্য ধারণায় মহিলাদের স্বাধীনতা সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন ভারতীয় প্রেক্ষাপটে।’
এই প্রতিবেদন পড়ার পরই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে ওঠা অভিযোগকে সামনে নিয়ে আসেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি বলেন, ‘এক ব্যক্তি টাকা, সংবাদমাধ্যম, পেশিশক্তি এবং দৈন্যতা নিয়ে এসেছিল বাংলায়। আর ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন, দিদি ও দিদি। আপনারা নতুন সদন তৈরি করেছেন ঠিকই, কিন্তু আমি অনুরোধ করব আপনাদের সকলকে প্রথমে মানসিকতা পাল্টান।’ এই মহিলা সংরক্ষণ বিল ১৯৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংসদ থাকতে নিয়ে এসেছিল। বাংলা থেকে ৪১ শতাংশ মহিলা প্রার্থী করেন তিনি লোকসভা আসন দিয়ে। আজ ৩৯ শতাংশ মহিলাকে জিতিয়ে লোকসভায় পাঠিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ‘বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দুর ভূমিকা প্রশংসনীয়’, কৌস্তভের মন্তব্যে আলোড়ন
তাছাড়া এই বিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ডেরেক। তাঁর কথায়, ‘আমরা ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে বলছি, এটা ২০২৪ সালেই নিয়ে আসুন। বাতিল করুন ৩৩৪এ ধারা। যদি সেটা করতে আপনাদের কঠিন মনে হয় তাহলে দ্বিতীয় সমাধানও আছে। লোকসভা নির্বাচনে এক–তৃতীয়াংশ মহিলাদের জিতিয়ে নিয়ে আসুন আপনার দলের পক্ষ থেকে। আর সেটা আমাদের দেখান। আমি নিশ্চিত করছি আমরা তা করে দেখাব।’ মহিলা সংরক্ষণ বিল আনা হলেও সেটা কবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ দুটি—এক, জনগণনা। দুই, পুনর্বিন্যাস।