উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে শ্রমজীবী এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত। জৌনপুরের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক রাজেশ রাই এই বিস্ফোরণ মামলায় বাংলাদেশি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হরকাত উল জিহাদ আল ইসলামি (হুজি)–এর সদস্য হিলাল ওরফে হিলালুদ্দিন এবং নাফিকুল বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। জানা যায়, হিলালুদ্দিন ট্রেনে বোমা রেখে দিয়েছিল। আর নফিকুল বিশ্বাস বিস্ফোরণে সহায়তা করেছিল। তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানাও করেছে আদালত। প্রায় দু'সপ্তাহ আগে আদালত তাদের দু'জনকে দোষী ঘোষণা করে। মঙ্গলবার সাজা ঘোষণা করে আদালত।
আরও পড়ুন: বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ভাগলপুর–জয়নগর ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস, নেপথ্যে কি নাশকতা?
শ্রমজীবী এক্সপ্রেসে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৫ সালের ২৮ জুলাই। সিংরামউ রেলওয়ে স্টেশনের হরিহরপুর রেলওয়ে ক্রসিংয়ের কাছে শ্রমজীবী এক্সপ্রেসের সাধারণ বগিতে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৬২ জন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। সেই মামলায় প্রায় ১৯ বছর পর আরও দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত। এই মামলায় জৌনপুর আদালতে ৪৩ জন সাক্ষীও হাজির হয়েছিল। এই মামলায় এর আগে ট্রেনে বোমা রাখার জন্য বাংলাদেশি সন্ত্রাসী রনি ওরফে আলমগীরকে ২০১৬ সালের ৩০ জুলাই মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত। এরপরে ষড়যন্ত্রকারী ওবায়দুর রহমানকে ওই বছরের ৩১ অগস্ট মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত। পরে দুজনই হাইকোর্টে আপিল করেছেন। সেটি এখনও বিচারাধীন। এতে একজনের বিরুদ্ধে বোমা তৈরির এবং অন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পাটনা জংশন থেকে ট্রেনে বোমা রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ, ট্রেনের বগিতে বোমা রেখে দিয়েছিল আলমগীর ওরফে রনি। লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য ওবেদুর রহমান এই বোমা তৈরি করেছিল। তাদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন, ৩০৭ ধারায় খুনের চেষ্টা, ১৪৯ ধারায় বেআইনি সমাবেশ, বিস্ফোরক আইন, বিদেশি আইন এবং রেলওয়ে আইনের অধীনে তাদের সাজা দিয়েছিল আদালত। এদিনও ওই দুই অভিযুক্তকে একই ধারায় সাজা দিয়েছেন বিচারক।
অন্যদিকে, এই মামলার আরও দুই আসামি গোলাম রাজদানী ওরফে ইয়াহিয়া ও সাঈদ মামলা চলাকালীন মারা যান। তারা সকলেই বাংলাদেশের ওই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। জানা যায়, ট্রেনের কামরার টয়লেটে বোমা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, যে দুটি যুবক একটি সাদা স্যুটকেস নিয়ে জৌনপুর রেলস্টেশনে ট্রেনে উঠেছিল। কিছুক্ষণ পরে তারা দুজনই চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পড়ে। আর তারপরেই বিস্ফোরণে কোচটি কেঁপে ওঠে।