সুরক্ষা, চাবাহার বন্দর থেকে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহায়তা, ত্রিকেট- আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রির প্রথম বৈঠকে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হল। দুবাইয়ের বৈঠকের পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সুরক্ষা নিয়ে নয়াদিল্লির যে উদ্বেগ আছে, সেটার সংবেদনশীলতা অনুভব করেছে আফগানিস্তান। সুরক্ষা সংক্রান্ত ঠিক কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিস্তারিতভাবে কিছু জানানো হয়নি।
ভারত-আফগানিস্তান বৈঠকে যোগ থাকল পাকিস্তানের?
তবে নাম গোপন রাখার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে অবহিত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো পাকিস্তানের বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের অনেক জঙ্গি যে আফগানিস্তানে আছে, সেটা নিয়ে ভারত লাগাতার উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে। অতীতে তালিবান সরকারের কাছে নয়াদিল্লি আর্জি জানিয়েছিল যে আফগানিস্তানের মাটিতে যেন ভারত-বিরোধী কাজকর্ম চলতে দেওয়া না হয়।
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, এবারের বৈঠকেও সেই বিষয়টি উঠে আসতে পারে। বিশেষত দুবাইয়ে যেদিন বৈঠক হয়েছে, তার ঠিক দু'দিন আগেই আফগানিস্তানে পাকিস্তানের চালানো এয়ার স্ট্রাইকের নিন্দা করেছে ভারত। গত ২৪ ডিসেম্বর আফগানিস্তানে এয়ার স্ট্রাইক চালিয়েছিল পাকিস্তান। তাতে মহিলা, শিশু-সহ কমপক্ষের ৪৬ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের তরফে কড়া ভাষায় জানানো হয়েছিল যে 'নিজেদের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার' জন্য প্রায়শই প্রতিবেশীদের দিকে আঙুল তোলে।
চাবাহার বন্দর নিয়েও আলোচনা
সেই পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান পশ্চিম এশিয়া পর্যন্ত পৌঁছানোর যে রাস্তা বের করেছে ভারত, সেই চাবাহার বন্দর নিয়েও দুবাইয়ের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ইরানের চাবাহার বন্দরের ব্যবহার বাড়ানোর বিষয়ে দু'পক্ষই একমত হয়েছে। বাণিজ্যিক কাজের পাশাপাশি চাবাহার বন্দরকে আফগানিস্তানে সহায়তা প্রদানের জন্যও ব্যবহার করা হবে।
ক্রিকেট নিয়েও সহযোগিতা বাড়াতে চায় ভারত-আফগানিস্তান
সার্বিকভাবে তালিবান সরকারের অনুরোধে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আফগানিস্তানকে আরও সহায়তা প্রদান করবে বলে জানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির তরফে জানানো হয়েছে, শরণার্থীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও ভারত সহায়তা প্রদানের প্রতিজ্ঞা করেছে। সেইসঙ্গে ক্রিকেটের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে দু'দেশ একমত হয়েছে বলে ভারতের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Taliban: ঘরের মেয়েদের যেন বাইরে থেকে দেখা না যায়, আফগানিস্তানে জানলা নিষিদ্ধ করল তালিবান!
তবে ভারত আগে থেকেই আফগানিস্তানের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে আসছে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ৫০,০০০ মেট্রিক টন গম, ৩০০ টন ওষুধ, ২৭ টনের ভূমিকম্প ত্রাণ, ৪০,০০০ লিটার কীটনাশক, ১০০ মিলিয়ন পোলিয়ো ডোজ, ১,৫ মিলিয়ন কোভিড টিকার ডোজ, ১.২ টন স্যানিটারি কিটের মতো বিভিন্ন সামগ্রী পাঠানো হয়েছে আফগানিস্তানে। যে দেশে অদূর ভবিষ্যতে ভারত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে।