বাংলাদেশের হিন্দুদের শান্তি কামনায় ১১১ কিলোগ্রাম শুকনো লঙ্কা পুড়িয়ে যজ্ঞ করা হল গঙ্গাসাগরে। শুধু তাই নয়, মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র জপ করেন সাধুরা। শ্রীখোল বাজিয়ে নামগান করা হয়। করা হয় কীর্তন। সূর্যপ্রণাম করে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য শান্তিকামনা করেন গঙ্গাসাগরের পুরোহিত ও সাধুরা। তাঁদের বক্তব্য, বাংলাদেশের হিন্দুদের অবস্থা ভালো নয়। তাঁরা ভালো নেই। যা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। তাই বাংলাদেশের হিন্দুদের শান্তিকামনা করে বিশেষ আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের যাতে সুমতি হয়, সেই প্রার্থনা করেন সাধু এবং পুরোহিতরা।
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে ভয়ংকর অত্যাচারের অভিযোগ
এমনিতে গত ৫ অগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে অত্যাচারের ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে যে মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে মূর্তি। হিন্দুদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলেছে তাণ্ডব। যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় কারণে নয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তারইমধ্যে বাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের উপরে অত্যাচারের যে ঘটনা সামনে এসেছে, তা নড়িয়ে দিয়েছে সাগরের মানুষকে। ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে বাংলাদেশে আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁরা ফেরার পরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ভারতীয় মৎস্যজীবীদের মারধর করা হয়েছে বাংলাদেশে। অথচ ভারতে বাংলাদেশের যে মৎস্যজীবীরা আটকে পড়েছিলেন, তাঁদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছিল। যাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাঁদের চিকিৎসারও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল বলে জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের মারধর করা হয়েছে, দাবি মমতার
তিনি বলেন, ‘(বাংলাদেশে আটকে থাকা ভারতীয় মৎস্যজীবীদের) কয়েকজন খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। সবাই নন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম যে খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন? তাঁরা বলতে চাননি। জানতে পারলাম যে তাঁদের কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। তাঁদের নিয়ে গিয়ে দড়ি দিয়ে হাতদুটো বেঁধে রাখা হয়েছিল। তাঁদের মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। ফলে কয়েকজনের কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট লেগেছে। জামাকাপড় পরে আছেন বলে বোঝা যাচ্ছে না। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তাই বুঝতে পেরেছিলাম।’
বিভীষিকার বর্ণনা মৎস্যজীবীদের
সেই বিভীষিকার বর্ণনা দিয়ে এক মৎস্যজীবী বলেন, ‘আমাদের ধরার পরে বলেছিলাম যে মেশিনে একটু ডিসটার্ব হচ্ছে। কোনও কথা শুনল না (ওরা)। বলল যে ওঠ, ওঠ। তারপর হাত দুটো বেঁধে দিল। সারারাত মারধর করল।’ তিনি আরও বলেন, ‘মারল। তারপর হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে গেল। সেখানে উলটো-পালটা কথা বলছিল।’