বাংলাদেশে সংখ্যালঘু ও নারীর অধিকার রক্ষায় তাঁদের দল বাংলাদেশ জামাত-ই-ইসলামি যে অবস্থান নিয়েছে,তাতে নাকি ভারী সন্তুষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এমনটাই দাবি করেছেন জামাত নেতা সৈয়দ আবদুল্লা মহম্মদ তাহের।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে, আজ (রবিবার - ২৭ এপ্রিল, ২০২৫) বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ-এর অ্য়াম্বাস্যাডর মাইকেল মিলারের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন তাহের। সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় মগবাজারে অবস্থিত জামাতের দলীয় কার্যালয়ে। সেই বৈঠকের পরই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ওই জামাত নেতা।
সেখানেই তিনি দাবি করেন, তাঁদের দল বাংলাদেশে নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। এবং এত দিন এই বিষয়ে তাঁদের দল যে অবস্থান বজায় রেখেছে, তাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নও নাকি সন্তোষ প্রকাশ করেছে!
তাহের একইসঙ্গে জানিয়েছেন, নারীর অধিকার নিয়ে তাঁরা সচেতন হলেও দেহ ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়ার পক্ষপাতী তাঁরা নন। কারণ, এই লাইসেন্স নারীর প্রতি অবমাননাকর ও নারীর জন্য অত্যন্ত লজ্জার বলে মনে করেন তাঁরা। তাই, জামাত দেহ ব্যবসার লাইসেন্স দেওয়ার বিরোধিতা করে।
তাহের আরও জানিয়েছেন, এদিনের বৈঠকে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জামাতের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক আলোচনা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে, বাংলাদেশের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ দু'টি মন্তব্য করেছেন এই জামাত নেতা। দলের হয়ে তাঁর দাবি, নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, তা প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে। এবং সেই লক্ষ্যেই প্রত্যেকটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাতে হবে। যাতে নজরদারি সহজ ও সর্বাত্মক হয়।
জামাতের আরও একটি দাবি হল, আগামী দিনে যখন বাংলাদেশে নির্বাচনের মাধ্যমে নয়া সরকার গঠন করা হবে, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ও দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ - কোনও এক পক্ষকে অধিক ক্ষমতা দেওয়ার পক্ষপাতী নয় জামাত নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বারবার সংখ্য়ালঘু নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশে। অন্যদিকে, সেদেশের আমজনতাই নারী নির্যাতনের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সরব হয়েছে।
যদিও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেসব কখনও মানতে চায়নি। কিছু 'বিচ্ছিন্ন' ঘটনার কথা উল্লেখ করলেও বাংলাদেশে হাসিনা পরবর্তী সময়ে ইসলামি কট্টরপন্থীদের কর্তৃত্ব ক্রমশ বাড়ার যে অভিযোগ বারবার সামনে এসেছে, তা মহম্মদ ইউনুসের প্রশাসন কখনও মানেনি। আর এবার জামাত দাবি করছে, বাংলাদেশের নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষা নিয়ে তাদের অবস্থানে নাকি খুশি ইউরোপীয় ইউনিয়ন!