সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) ইরানের ওপর ইজরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশের পর ইজরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করেছে বিদেশ মন্ত্রণালয়। উত্তেজনা কমানোর জন্য 'সংলাপ ও কূটনীতির' আহ্বান জানিয়ে ভারত বলেছে, এসসিও'র বিবৃতির আলোচনায় তারা অংশ নেয়নি।
এর আগে চিনের নেতৃত্বাধীন আঞ্চলিক গোষ্ঠীটি ইরানে ইজরায়েলি হামলার 'তীব্র নিন্দা' করলেও ভারত এ বিষয়ে তাদের অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা করেছে।
'১৩ ই জুন এই বিষয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছিল এবং এখনও একই রয়েছে। আমরা সংলাপ ও কূটনীতির চ্যানেলগুলোকে ব্যবহার করে উত্তেজনা প্রশমনের দিকে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সেই লক্ষ্যে প্রচেষ্টা গ্রহণ করা অপরিহার্য। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুক্রবার তার ইজরায়েল ও ইরানি সমকক্ষদের সাথে কথা বলেছেন এবং যেখানে তিনি মধ্য প্রাচ্য অঞ্চলের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন।
জয়শঙ্কর ‘যে কোনও উত্তেজনামূলক পদক্ষেপ এড়ানো এবং কূটনীতিতে দ্রুত ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন’। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে এই বিষয়ে ভারতের অবস্থানও এসসিও সদস্যদের জানানো হয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই এসসিও-র উপরে উল্লিখিত বিবৃতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়নি ভারত। কয়েক ঘণ্টা আগে এসসিও'র এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের ওপর ইজরাইলের হামলা অসামরিক ও পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে এবং এতে অসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
'এটি আন্তর্জাতিক আইন ও রাষ্ট্রসংঘ সনদের নীতিকে মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করেছে, ইরানের সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করেছে, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাকে ক্ষুণ্ন করেছে এবং বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে,' বলেছে এসসিও।
এই ১০টি আঞ্চলিক গ্রুপে রয়েছে চিন, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, রাশিয়া, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও বেলারুশ। এর আগে ইরানের পরমাণু ও সামরিক পরিকাঠামোতে ইজরায়েলের বিমান হামলার পর বিদেশ মন্ত্রণালয় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তেজনা বৃদ্ধি এড়াতে উভয় দেশকে আহ্বান জানিয়েছিল। বিবৃতিতে উভয় দেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ইজরায়েল ও ইরানকে 'সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত' ভারত। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করার একদিন পরেই এসসিও সম্পর্কে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতি এসেছে।
ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী মোদি পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা জানান এবং এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
‘ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর থেকে ফোন পেয়েছি। তিনি আমাকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন,’ প্রধানমন্ত্রী মোদী একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে যোগ করেছেন, 'আমি ভারতের উদ্বেগ শেয়ার করেছি এবং এই অঞ্চলে দ্রুত শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছি। নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকেও পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।