কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়াই পড়শি দেশে গেল পুলিশ। যার জেরে শুরু হল কূটনৈতিক টানাপোড়েন। এই আবহে কেন্দ্রের তরফ থেকে সব রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পুলিশকে চিঠি দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ভিনদেশে গিয়ে তদন্ত করতে হলে আগে থেকে কেন্দ্রের অনুমতি নিতে হবে। উল্লেখ্য, যেই ঘটনা ঘিরে এত কাণ্ড, সেটি ঘটেছিল গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে। জানা গিয়েছে, পঞ্জাব পুলিশের অ্যান্টি-গ্যাংস্টার টাস্ক ফোর্সের প্রায় ৬ জন আধিকারিকের একটি দল কাঠমান্ডুর উপকণ্ঠে নাগার্জুন এলাকার একটি রেস্তোরাঁর কাছ থেকে একজন ওয়ান্টেড অপরাধীকে ধরার চেষ্টা করে। তখন নেপাল পুলিশ জানতে পারে যে ভারতীয় অফিসাররা তাদের অজান্তে অভিযান চালানোর চেষ্টা করছে। এই আবহে তারা তৎপর হয়ে পঞ্জাব পুলিশকে আটকে দিয়েছিল।এর জেরে কূটনৈতিক স্তরে টানাপোড়েন শুরু হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লির শীর্ষ আধিকারিকরা জানান, শীর্ষ স্তরে ভারতের তরফ থেকে নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এই বিষয়টি নিয়ে। তারপর সমস্যা মেটানো হয়। এই বিষয়ে দিল্লির আধিকারিকরা মেনে নিচ্ছেন যে পরিস্থিতিটা ভারতের জন্যে বিব্রতকর ছিল। এদিকে ভারত ও নেপাল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। কারণ উভয় পক্ষই নিয়মিতভাবে ফৌজদারি তদন্তে আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে একে অপরকে সহায়তা করে থাকে।এই আবহে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিন্দুস্তান টাইমস। এই বিষয়ে নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও মুখপাত্র রামচন্দ্র তিওয়ারি বলেন, 'এ ধরনের কোনও ঘটনা সম্পর্কে আমাদের কাছে তথ্য নেই।' অপরদিকে পঞ্জাবের এজিটিএফ প্রধান প্রমোদ বান এই ঘটনাকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করে বলেন, 'আমাদের দল তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিল, কোনও অভিযান চালায়নি।' কোনও পুলিশ আধিকারিককে নেপালে আটক করা হয়নি বলেও দাবি করেন তিনি। এদিকে ভারত সরকারও আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই গত মার্চ মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে সব রাজ্যের পুলিশ এবং মুখ্যসচিবদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। তাতে কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করেই বলা হয়, 'সাম্প্রতিক একটি ঘটনায় দেখা গিয়েছে যে রাজ্য পুলিশের একটি দল সে দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের আগাম অনুমোদন ছাড়াই একটি ফৌজদারি মামলার তদন্তের জন্য বিদেশে গিয়েছিল। যার ফলে বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।'এদিকে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, 'কোনও ফৌজদারি বিষয়ে তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশ কর্মীরা যদি বিদেশে সফরে যান তাহলে যেন তারা সেই দেশের কর্তৃপক্ষের আগাম অনুমোদন নেন এবং বিদেশ মন্ত্রক বা সংশ্লিষ্ট ভারতীয় মিশনকে এই বিষয়ে যেন জানিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে অস্বস্তি এড়ানো যায়। তাই অনুরোধ করা হচ্ছে, তদন্তের জন্য বিদেশ সফরের আগে যথাযথ স্তরে যথাযথ অনুমোদন নেওয়া হোক। এই বিষয়ে পুলিশকর্মীরা যেন যথাযথভাবে সংবেদনশীল হন।'