২৪ বছরের পুরনো একটি মানহানির মামলায় বিশিষ্ট সমাজকর্মী মেধা পাটেকরকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। তবে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আদালতে নির্দেশে জেলমুক্ত হন গুজরাটে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনের অন্যতম মুখ মেধা। ২০০১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ওই মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন দিল্লির বর্তমান লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। গত বছরই এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত মেধা জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু প্রবেশন বন্ড জমা না দেওয়ার জন্য বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল সাকেত আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ। আদালত আরও জানিয়েছিল, আগামী শুনানির দিনের মধ্যে উল্লেখিত নির্দেশ পালন না করা হলে অবিলম্বে সাজা কার্যকর হবে। তারই জেরে শুক্রবার দিল্লি পুলিশের এই পদক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন-'কাউকে ছাড় নয়!' সাভারকারকে অবমাননাকর মন্তব্য, রাহুলকে সতর্ক করল সুপ্রিম কোর্ট
মানহানি মামলায় আগেই মেধার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য মামলা দায়ের হয়েছিল। বুধবার প্রবেশন বন্ডের জন্য তাঁর আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন তিনি হাজিরা এড়িয়ে যান।আর সেই কারণেই দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করে বিশিষ্ট সমাজকর্মীকে। আদালতে মেধার আইনজীবী সওয়াল করেন, 'জামিন অযোগ্য মামলায় গ্রেফতারি নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে আমরা প্রবেশন বন্ডে সই করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি। আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক, আজই আমি প্রয়োজনীয় নথিপত্র পেশ করব।' এরপরেই দিল্লির সাকেত কোর্টের বিচারক বিপিন খারব জানান, 'সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হলে আমি মুক্তির নির্দেশ দিতে পারব না। অর্থাৎ প্রবেশন বন্ড সংক্রান্ত যা করা দরকার, তা করতেই হবে।' এরপর প্রবেশন বন্ডের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় কয়েকঘণ্টার মধ্যে মেধা পাটেকর মুক্তি পান।
আরও পড়ুন-'কাউকে ছাড় নয়!' সাভারকারকে অবমাননাকর মন্তব্য, রাহুলকে সতর্ক করল সুপ্রিম কোর্ট
ঘটনার সূত্রপাত ২০০০ সালে। সেই সময় নর্মদা বাঁচাও আন্দোলন নিয়ে যখন একেবারে চূড়ান্ত ব্যস্ত মেধা পাটেকর, তথন তৎকালীন ‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সিভিল লিবার্টিজ’ নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি ছিলেন দিল্লির বর্তমান লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা। তাঁর সংগঠন নর্মদা আন্দোলনের বিরোধিতা করে বিজ্ঞাপন দেয়। এরপরেই পাল্টা বিবৃতি জারি করে মেধা অভিযোগ করেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির তৎকালীন সভাপতি ভিকে সাক্সেনা হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশ থেকে আর্থিক লেনদেনে যুক্ত। গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এজেন্ট’ হিসেবেও তিনি চিহ্নিত করেছিলেন সাক্সেনাকে। তারপরেই ২০০১ সালে আহমদাবাদের একটি আদালতে প্রবীণ সমাজকর্মীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন ভিকে সাক্সেনা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০০৩ সালে মামলাটি দিল্লিতে স্থানান্তরিত হয়।