কর্ণাটকের ধর্মস্থলে একাধিক খুন, ধর্ষণ ও গণকবর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলায় নয়া মোড়। এই ঘটনায় অভিযোগকারী প্রাক্তন স্যানিটেশন কর্মীকেই শনিবার গ্রেফতার করল সিট। বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, অভিযোগকারীর বক্তব্য এবং তাঁর জমা দেওয়া নথিতে অসঙ্গতি ধরা পড়ার পর পুলিশ তাকে আটক করে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্যও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাড়হিম কাণ্ড! প্রথম মানব কঙ্কালের হদিশ, ধর্মস্থলে গণকবর মামলায় নয়া মোড়
অভিযোগকারী দাবি করেছিলেন, ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে তিনি ধর্মস্থলে মৃতদেহ কবর দিতে বাধ্য হয়েছেন। তার কথায়, কবর দেওয়া দেহের মধ্যে নারী ও শিশুদের দেহও ছিল। কিছু দেহে যৌন নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। অভিযোগকারী এক ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে একটি বিবৃতি দাখিল করেছিলেন। তদন্তকারীদেরকে নির্দিষ্ট স্থান দেখিয়েছিলেন যেখানে কবর খনন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন। এই স্থানগুলো থেকে কিছু কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এগুলোর ফরেনসিক যাচাই এখনও বাকি।
জানা যাচ্ছে, ২০০৩ সালের মে মাসে ধর্মস্থলে ভ্রমণের সময় সুজাতা ভাট নামের এক মহিলার মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার পর অভিযোগগুলো তীব্র হয়ে ওঠে। ভাট প্রথমে দাবি করেছিলেন, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে এবং মন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে তাঁকে তথ্য গোপন রাখার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি দাবি প্রত্যাহার করেন এবং জানান, সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধের কারণে তাঁকে এই অভিযোগ করতে বলা হয়েছিল। ভাট প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বিধানসভায় বলেন, এখন পর্যন্ত শুধু খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সিট আরও খননের প্রয়োজনীয়তা এবং তদন্তের সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি সতর্ক করেছেন, অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিট প্রধান প্রণব মোহান্তি এবং অন্যান্য তদন্তকারীরা শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত অভিযোগকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কর্মকর্তারা জানান, তাঁর বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযোগকারী তাঁর মেডিকেল পরীক্ষা করিয়েছেন এবং তদন্তকারীরা পুরো ঘটনার তথ্য যাচাই করছেন। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সিট এখনও ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে এবং তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী অভিযোগকারীর বক্তব্য ভুয়ো প্রমাণিত হয়েছে। ধর্মস্থলের এই ঘটনার কারণে জনসাধারণের মধ্যে বড় ধরনের আলোচনা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগকারীর প্রাথমিক দাবিতে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল। তবে সিটের তদন্ত এবং অভিযোগ প্রত্যাহারের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।