আরজি কর কাণ্ডের জের ধরে সারা দেশে চিকিৎসকরা আন্দোলনে নেমেছেন। এই আবহে জাতীয় পর্যায়ে টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দিলেন বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই টাস্কফোর্স পরামর্শ দেবে। এই বিষয়ে আজ প্রধান বিচারপতি বলেন, 'দেশ আবার একটি ধর্ষণ আর খুনের জন্য অপেক্ষা করবে না, যে তার পর পরিবর্তন হবে।' পাশাপাশি চিকিৎসকদের কাছে কাজে ফেরার জন্যে অনুরোধ জানান প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, 'এইসম-এর মতো বহু হাসপাতালে কয়েক মাস বা বছর আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। এই প্রতিবাদের সময়কালে যদি সেই রোগীদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিস হয়ে যায়, তাহলে আবার বহু দিন অপেক্ষা করতে হবে তাদের।' (আরও পড়ুন: '... হয়ত ময়নাতদন্তই হত না', আরজি কর কাণ্ডে বড় দাবি চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর)
আরও পড়ুন: বিস্ফোরক শ্মশানের ম্যানেজার, আরজি কর কাণ্ডে শেষকৃত্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
এদিকে জাতীয় টাস্কফোর্সে থাকবেন - সার্জন ভাইস অ্যাডমিরাল আর কে সারিয়ান; ডাঃ রেড্ডি, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ন্যাশনাল গ্যাস্ট্রোলজি; ডাঃ এম শ্রীবাস, ডিরেক্টর AIIMS, দিল্লি; ডাঃ প্রথমা মূর্তি, নিমহান্স, ব্যাঙ্গালোর; ডঃ পুরী, পরিচালক, এআইআইএমএস, যোধপুর; ডাঃ রাভাত, গঙ্গারাম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা সদস্য; অধ্যাপক অনিতা সাক্সেনা, পন্ডিত বিডি শর্মা কলেজের ভিসি; ডাঃ পল্লবী এবং ডাঃ পদ্মা শ্রীবাস্তব।
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে আজ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। সেখানে আজ সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয়, একজন চিকিৎসক খুন হলেন রাতে। দেহ উদ্ধার হল সকালে। এরপর অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হয়। তবে খুনের মামলা রুজু হয় রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে। নির্যাতিতার বাবা গিয়ে এফআইআর করেন। তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কী করল? এর আগে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সন্দীপ ঘোষ আরজি করের অধ্যক্ষ পদে ইস্তফা দেওয়ার পর কী ভাবে আবার অন্য কোথাও যোগ দিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, 'প্রথমে ঠিক ভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল? একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল। পুলিশ কি হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?' (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডের সাথে জড়াবেন না দুর্গাপুজোকে, আবেদন ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের)
আরও পড়ুন: একজনই দোষী? এমনই কি বলা হয়েছে আরজি কর কাণ্ডের ময়নাতদন্তে রিপোর্টে?
আরও পড়ুন: হঠাৎ ঘুম ভাঙল পুলিশের, SIT গঠনের পর এবার সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রুজু
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, 'বিকেলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয় খুন। এফআইআর দায়ের হয়েছিল রাত ১১টা ৪৫মিনিটে। তার আগে কী করছিলেন অধ্যক্ষ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ? ওই সময়ে মৃতার বাবা-মা ছিলেন না। হাসপাতালের দায়িত্ব ছিল এফআইআর দায়ের করা।' এদিকে রাজ্যের তরফ থেকে সিনিয়র অ্যাডভোকেট কপিল সিব্বল যুক্তি সাজাতে চেষ্টা করেন। অপরদিকে প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে কী করা হবে বলে প্রশ্ন করেন প্রধান বিচারপতি। তার জবাবে কপিল সিব্বল বলেন, শীর্ষ আদালত যা বলবে তাই করব। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাজ্য সরকার যেন শান্তিপ্রিয় প্রতিবাদীদের ওপর কোনও বল প্রয়োগ করা যাবে না। এদিকে সিবিআইকে আগামী ২৩ তারিখের শুনানিতে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।