ভালো নেই বাংলাদেশের সংখ্য়ালঘুরা! হাসিনা সরকারের পতনের সময় থেকেই লাগাতার হিংসা ও আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে তাঁদের। খুন, ধর্ষণ, লুট - বাদ যাচ্ছে না কিছুই! এমনটাই দাবি 'বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ'-এর। নিজেদের দাবি ও অভিযোগের স্বপক্ষে রীতিমতো পরিসংখ্যান পেশ করেছে তারা।
সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের তরফে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। তাতে তারা যে তথ্যাবলী উপস্থাপিত করেছে, তা এককথায় ভয়ঙ্কর। গত ৫ অগস্ট প্রবল গণরোষের মুখে পদত্যাগ এবং দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
'বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ'-এর হাতে আসা তথ্য বলছে, তার একদিন আগে থেকেই, অর্থাৎ গত ৪ অগস্ট থেকে ২০ অগস্টের মধ্যে বাংলাদেশের নানা অংশে অন্তত ২,০১০টি সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে!
১৭ দিনে আক্রান্ত ১,৭০৫টি সংখ্যালঘু পরিবার
সংশ্লিষ্ট সময়সীমায় বাংলাদেশের ৭৬টি জেলা ও মেট্রোপলিটনের মধ্যে ৬৮টিতে মোট ২,০১০টি এমন ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে সংখ্যালঘু নাগরিকেরা কোনও না কোনও হামলার শিকার হয়েছেন। এর ফলে সরাসরি ১,৭০৫টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১৫৭টি পরিবারের বাড়ি এবং ব্যবসা তছনছ করে, ভষ্ম করে দেওয়া হয়েছে।
সর্বাধিক আক্রান্ত খুলনা জেলার সংখ্যালঘুরা
খুলনা জেলায় সবথেকে বেশি হিংসার শিকার হয়েছেন সংখ্য়ালঘুরা। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলাকালীন ধর্ষিতা হয়েছেন অসংখ্য সংখ্যালঘু মহিলা। এমনকী, নির্যাতিতাদের মধ্যে একজন মূক ও বধির মহিলাও রয়েছেন।
হিংসার শিকার হয়েছেন আদিবাসীরাও
আক্রান্ত ১,৭০৫টি সংখ্যালঘু পরিবারের মধ্যে ৩৪টি আদিবাসী পরিবারও রয়েছে। তাঁদের বাড়িঘরে লুটপাট চালানোর পাশাপাশি সেগুলি ভাঙচুর করে তাতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে দাঙ্গাবাজরা। অসহায় এই মানুষগুলির পারিবারিক জমিও কেড়ে নিয়েছে লুটেরারা।
রেয়াত করা হয়নি উপাসনাস্থলগুলিকেও
সংশ্লিষ্ট ১৭ দিনে অন্তত ৬৯টি উপাসনাস্থল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি সবই সংখ্যালঘুদের উপাসনাস্থল ছিল। তথ্য বলছে, সাম্প্রদায়িক এই হামলার ঘটনাগুলিতে প্রধানত আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং আদিবাসীরা।
দাঙ্গার প্রত্যক্ষ শিকার প্রায় ৫০ হাজার সংখ্যালঘু
গত ৪ অগস্ট থেকে যে ভয়ঙ্কার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়েছে, তার জেরে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ সরাসরি আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের সংখ্যালঘু বাংলাদেশিরাই রয়েছেন। সরাসরি শিকার না হলেও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন আরও অন্তত ২ কোটি সংখ্যালঘু বাংলাদেশি।