বিদেশি প্রযুক্তিবিদরা যাতে আমেরিকায় থেকে চাকরি করতে পারেন, তার জন্য মার্কিন প্রশাসন মোট যত পরিমাণ এইচ-১বি ভিসা মঞ্জুর করছে, তার এক পঞ্চমাংশেরই দখল নিচ্ছেন বিভিন্ন ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত কর্মীরা!
ইউএস সিটিজেনশিপ অ্য়ান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (মার্কিন নাগরিকত্ব এবং অভিবাসন পরিষেবা)-এর একটি বিশ্লেষণধর্মী রিপোর্ট উদ্ধৃত করে এই সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট অনুসারে, শুধুমাত্র ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই (চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছ'মাসে) মোট ১.৩ লক্ষ এইচ-১বি ভিসা মঞ্জুর করেছে আমেরিকার সরকার। তার মধ্যে কেবলমাত্র ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদেরই দেওয়া হয়েছে ২৪,৭৬৬টি ভিসা!
যে ভারতীয় সংস্থাগুলি মার্কিন এইচ-১বি ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে একেবারে শীর্ষে রয়েছে, সেগুলির মধ্য়ে অন্যতম হল - ইনফোসিস, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস) এবং কগনিজেন্ট। এই সংস্থাগুলির কর্মীদের নামে ভিসা মঞ্জুর হয়েছে, যথাক্রমে - ৮,১৪০টি, ৫,২৭৪টি এবং ৬,৩২১টি।
এছাড়াও, ভারতীয় সংস্থা উইপ্রোর কর্মীদের নামে ১,৬৩৪টি এবং টেক মহিন্দ্রার জন্য এই সময়ের মধ্য়ে মোট ১,১৯৯টি ভিসার আবেদন মঞ্জুর করেছে জো বাইডেন প্রশাসন।
তবে, ভারতীয়দের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবার শীর্ষে যে সংস্থা রয়েছে, সেটা কিন্তু ইনফোসিস নয়। সেটি হল - অ্য়ামাজন ডট কম সার্ভিসেস এলএলসি। এই সংস্থার মাধ্যমে আমেরিকার ভিসা পেয়েছেন মোট ৯,২৬৫ জন ভারতীয় কর্মী।
প্রসঙ্গত, যাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলি নিজেদের প্রয়োজন ও চাহিদা অনুসারে বিদেশি দক্ষ কর্মীদের সাময়িকভাবে নিয়োগ করতে পারে, তার জন্যই এইচ-১বি ভিসা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এর ফলে মার্কিন মুলুকে অত্যন্ত লাভবান হচ্ছে ভারতীয় সংস্থাগুলি। বিশেষ করে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা ভারতীয় সংস্থাগুলির পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে বিশ্বের সবথেকে ধনী যে মানুষটি, সেই ইলন মাস্কও একটা সময় এই এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমেই আমেরিকায় ঢুকেছিলেন। বর্তমানে তিনি অবশ্য একজন গণ্যমান্য মার্কিন নাগরিক।
যে কারণে, মাস্ক বরাবরই এই ভিসা বহাল রাখার পক্ষে সওয়াল করেছেন। তিনি খুল্লামখুল্লাই বলেছেন, মার্কিন শিল্প ও বাজারের বাড়বাড়ন্ত ধরে রাখতে হলে বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মীদের আনতেই হবে। যা নিয়ে বিতর্কও কিছু কম হচ্ছে না। কিন্তু, মাস্কের বক্তব্য - আমেরিকার স্বার্থেই মার্কিন মুলুককে সম্ভাবনা ও সুযোগের মুক্তাঞ্চলে উন্নীত করতে হবে।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, আগামী ২০ জানুয়ারি ফের মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসতে চলা ডোনাল্ড ট্রাম্পও মাস্ককে সমর্থন করেছেন। অথচ, তিনিই তাঁর আগেরবারের শাসনকালে এই ভিসার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন।