স্কুলের বোর্ডে 'জয় শ্রীরাম' লেখায় এক পড়ুয়াকে বেধড়ক মারধর করেছেন। এমনই অভিযোগে জম্মু-কাশ্মীরের সরকারি স্কুলের এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই ঘটনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এবার মুখ খুললেন শিবসেনার (উদ্ধব ঠাকরে শিবির) রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। তিনি বলেন, ‘এই ঘৃণা সবাইকে নিয়ে ডুবে যাবে। এই মুসলিম শিক্ষকের মধ্যে ততটাই ঘৃূণা আছে, যতটা ঘৃণা ভরতি আছে উত্তরপ্রদেশের তৃপ্তা ত্যাগীর মধ্যে। এই বাচ্চাদের কী দোষ যে তারা শাস্তি পাচ্ছে?’
কাঠুয়ায় ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল?
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৫ অগস্ট কাঠুয়ায় এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি অভিযোগ করেন যে স্কুলের বোর্ডে 'জয় শ্রীরাম' লেখায় তাঁর ছেলেকে মেরেছেন একটি সরকারি হাইস্কুলের (বানি) শিক্ষক ফারুখ আহমেদ এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ হাফিজ। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে বানি থানায় মামলা রুজু করা হয়। তারপর স্কুলে যায় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ফারুখকে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, ‘প্রধান শিক্ষক পলাতক। তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য তল্লাশি চলছে। তদন্তও চলছে।’
আরও পড়ুন: '১৫ অগস্ট জয় শ্রীরাম বলছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী, দমবন্ধ হয়ে যেত লর্ড কার্জনের'
পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত একটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের। ঘটনার তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে কাঠুয়ার ডেপুটি কমিশনার রাকেশ মিনহাস। তিনি বলেন, 'ওই ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য কমিটির সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রক্রিয়া আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দু'দিনের মধ্যে ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তাতে নির্দিষ্ট মন্তব্য থাকতে হবে। দিতে হবে পরামর্শ।' যে ঘটনার প্রেক্ষিতে শনিবার বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়া এবং অভিভাবকরা।
আর কাঠুয়ার সেই ঘটনা সামনে আসার পর উত্তরপ্রদেশের ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মুজফ্ফরনগরের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে স্কুলের মধ্যেই এক মুসলিম ছাত্রকে থাপ্পড় মারতে বলেন তিনি। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ওই ভিডিয়োর (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) প্রেক্ষিতে দাবি করা হয়েছে যে বাকি ছাত্রদের দিয়ে ওই মুসলিম ছাত্রকে মার খাওয়াচ্ছেন ওই শিক্ষক।
আরও পড়ুন: ‘ওর বাবা-মা স্ট্রিক্ট হতে বলেছিলেন,’ স্কুলে মুসলিম ছাত্রকে সহপাঠীর মারধরকাণ্ডে বললেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা
যদিও ওই শিক্ষক দাবি করেছেন, ওই ভিডিয়োর বিকৃতি করা হয়েছে। মুসলিম ছেলে হওয়ায় মারতে বলার ঘটনা ঘটেনি। তাঁর স্কুলে হিন্দু এবং মুসলিম ছেলেরা একসঙ্গে পড়াশোনা করে। সেইসঙ্গে ওই শিক্ষক দাবি করেন, ‘ওই বাচ্চার বাবা-মা আমায় চাপ দিচ্ছিলেন যাতে আমি ওর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করি, যাতে ঠিকমতো কাজ করে সেই পড়ুয়া।’